৭২ এর সংবিধানকে বদলাতে হবে: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ৭২ এর সংবিধানে জন আকাঙ্খা উপেক্ষিত হয়েছে। ক্ষমতা কাঠামো পাকাপোক্ত করতেই ৭২ এর সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। ৭২ এর সংবিধানই বাকশাল তৈরি করেছিল এই সংবিধানকে বদলাতে হবে।
শনিবার সকালে রাজশাহীর সাবেজ বাজার জিরো পয়েন্টে আয়োজিত রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রুপান্তরে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য গণসংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সাকি বলেন, বৈষম্য দূর করতে হলে ফ্যাসিস্ট সংবিধান পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে। অভ্যুত্থানের চেতনায় নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে। জনগণের নিজস্ব রাজনৈতিক দল তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া কোনো চাকরি নয়, কোনো পদোন্নতি নয়, কোনো বদলি নয়, যে সার্ভিসেই যান। পুরো রাষ্ট্রটাকে সাজানো হয়েছিল বিরোধী দলের ওপর নির্যাতনের জন্য। তাদের ভয় দেখানোর জন্য। তাদেরকে ক্রসফায়ারে গুলি করা, নিয়ে গিয়ে গুম করে দেওয়া। কিংবা মধ্যরাতে একটা স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য ক্লাস টেনের একজন শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে আসা। এই ছিল তাদের শাসন। ত্রাসের রাজত্ত কায়েম কর, এভাবে টিকে থাক।গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, এই শাসনব্যবস্থায় তারা এভাবে টিকে থেকে মনে করেছে এটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হবে। এইখান থেকে আপনাদের কেউ সরাতে পারবে না। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি যখন নির্বাচনটা করে ফেলতে পারলো। ২৮ অক্টোবর আমাদের যে সমাবেশগুলো ছিল। তখন তারা বিএনপির সমাবেশ, মিছিলে এজেন্ট ঢুকিয়ে পরিকল্পিত সন্ত্রাস তৈরি করে তারা সমাবেশ পণ্ড করে দিয়েছে। তারা ভেবেছিল ছাত্রদের কেউও একইভাবে দমন করে ফেলা যাবে। শেখ হাসিনা তো তুরি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন। ১৪ তারিখে শেখ হাসিনা ছাত্রদের অপমান করলেন। ভাবলেন এদের (ছাত্রদের ) যদি রাজাকারের নাতি-পুতি বলা যায়—তাহলে হয় তো এই দেশের মানুষ ঘুরে যাবে। কিন্তু ঘুরে যায়নি মানুষ।
তিনি বলেন, বহুবার আমরা বলেছি, মানুষের জীবনের চেয়ে সম্মান অনেক বড়। যখন সম্মান কিংবা ইজ্জতে আঘাত লাগে, তখন মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত থাকে। আমরাও দেখেছি শিক্ষার্থীরা ১৪ তারিখ রাতে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাস ও ছাত্রীরা হল ভেঙে বেড়িয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিয়েছে—‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’। তার জবাব দিয়ে দিয়েছে। ১৫ তারিখ বিক্ষোভ হয়েছে শেখ হাসিনা ভেবেছেন তার গুন্ডাবাহিনী দিয়ে দাবড়ানি দিয়ে ভয় দেখালে ছাত্ররা সরে যাবে। কিন্তু যায়নি। এই রাষ্ট্র আমরা বদলাতে চাই। যাদের আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। তারা আমাদেরকে গুলি করে মেরে ফেলে। আয়না ঘরে নিয়ে ঢুকিয়ে রাখে। শুধু রাজনৈতিক ভিন্নমত স্মরণ করার জন্য।
গণসংলাপে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ।
বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু।
জেলার সদস্য সচিব জুয়েল রানা এই গণসংলাপ সঞ্চালনা করেন।(ঢাকা টাইমস/২৩নভেম্বর/এসএ)
মন্তব্য করুন