শেখ হাসিনা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছেন: গোলাম পরওয়ার
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়ে চলে গেলেও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বিদেশে বসে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতা কারণে শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র সফল হতে পারেনি।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেখানে আছে সেটা তো ষড়যন্ত্রের জায়গা। সেখান থেকেই দেশ ও মুসলিম জাতিসত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়। শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে অডিও, ভিডিও বক্তব্য পাঠাচ্ছেন। ষড়যন্ত্র করে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের উসকে দিয়ে এই সরকারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু আমরা লাঠি হাতে মন্দির পাহারা দিয়ে প্রমাণ করেছি আমরা অসাম্প্রদায়িক।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘গণতন্ত্রের দুশমন শেখ হাসিনা বিদেশে গেলেও ষড়যন্ত্র তার থেমে নেই। ওখানে বসেই তিনি ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা আনসারদের নানা দাবি-দাওয়া, জুডিশিয়াল ক্যু করার নির্দেশ দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সব ষড়যন্ত্র সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতা ব্যর্থ করে দিয়েছে। একটার পর একটা ষড়যন্ত্র চালিয়েও তিনি সফল হতে পারেনি।’
জামায়েত ইসলামী দেশে ক্ষমতায় এলে দেশে নারী ও অমুসলিমদের কোনো অধিকার থাকবে না- শেখ হাসিনা এমন প্রচার করেছেন অভিযোগ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। মহানবী (সা.) মদিনায় যখন আদর্শ রাষ্ট্র গঠন করেছিলেন, তখন সেখানে শিশু, নারী ও অমুসলিমদের জীবন অনেক নিরাপদ ছিল। তাই বলি আমাদের দেশের মা-বোন ও অমুসলিমদের ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
৫ আগস্টের চার দিন আগে শেখ হাসিনা সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কথা উল্লেখ করে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘কিন্তু তারপর চার দিনও টিকতে পারেনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। জনরোষে পড়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হলেন শেখ হাসিনা ও তার স্বজনরা। তাদের বিচার জনগণ করবে। তারা নির্বাচনে আসতে পারবে কি না সেটি জন-আকাঙ্ক্ষার ওপর নির্ভর করবে।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘ন্যূনতম সংস্কারের পর যৌক্তিক সময়ে জাতীয় নির্বাচন হবে। তবে এই যৌক্তিক সময় কত দিন বা কত বছর তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাহী বিভাগ সংস্কারের পর সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।’
ইসলামী আন্দোলন বাস্তবায়ন করতে গেলে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া বাদ দিতে হবে বলে মন্তব্য করে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান হবো, মেম্বার হবো এমন চাহিদা অন্তরে দখল করে রাখা যাবে না। আজকে যারা কর্মী আছেন আগামীতে তারা নেতা হবেন, আর যারা নেতা আছেন তারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাবেন। এভাবেই ইসলামি আন্দোলন এগিয়ে যাবে। আমরা রাষ্ট্রের দায়িত্ব পেলে শাসক হব না, আমরা জনগণের সেবক হয়ে দেশের জন্য কাজ করব।’
জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মো. কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মো. নূরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও অঞ্চল পরিচালক (ঢাকা উত্তর অঞ্চল) অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা উত্তর অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ দেলওয়ার হোসাইন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুর রহমান প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/মোআ)
মন্তব্য করুন