ক্রীড়া সংস্থাগুলো সংস্কার করে শিগগিরই বিসিবিতে নতুন পরিচালক আনা হবে: ক্রীড়া উপদেষ্টা
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সেক্টরের মতো পরিবর্তন শুরু হয়েছে ক্রীড়াঙ্গনেও। দেশের এই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে কিছুটা অগোছালো অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও স্বীকার করেছেন, জোড়াতালি দিয়ে চলছে বিসিবি। তবে সমস্যা সমাধানে শিগগিরই ক্রীড়া সংস্থাগুলো সংস্কার করে বিসিবিতে নতুন পরিচালক আনা হবে জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গত ১০০ দিনের কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আসিফ মাহমুদ।
সেখানে প্রসঙ্গ উঠে আসে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলের করা মন্তব্যের। যিনি বর্তমান ক্রিকেট বোর্ড জোড়াতালি দিয়ে চলছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। বিষয়টি স্বীকার করেছেন আসিফও। তুলে ধরেছেন প্রেক্ষাপট। একইসঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুত সমস্যা সমাধানের।
আসিফ বলেন, ‘এটা বাস্তব যে জোড়াতালি নিয়ে চলছে। কারণ অনেক পরিচালক এখন নেই। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন পরিচালকদের আমাদের নিতে হবে। সেটা নেওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। যেমন আমাদের ক্রীড়া সংস্থাগুলো এখনো পুনর্গঠন হয়নি। পুনর্গঠনের কার্যক্রম চলমান আছে। সেগুলো পুনর্গঠন হলে তার মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই আরও নতুন পরিচালক যোগ হবে। বিসিবির বিভাগগুলো ভাগ করে দেওয়ার ব্যাপার আছে। সেগুলো ভাগ করে দিলে বিসিবির কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আসবে বলে আমি মনে করছি।’
মূলত, ৫ আগস্টের আগে ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের বেশিরভাগই সাবেক সরকারের প্রতিনিধি ছিলেন। সাবেক বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন-ই ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে যাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি। আরও অনেকেই এভাবে আড়াল হয়েছেন। আসিফ বলছেন, রাজনৈতিকীকরণ করা না হলে দেশে যত পরিবর্তনই আসুক বিসিবি চলতো তাদেরই নিয়মে।
তিনি বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক, আমাদের খেলাধুলাকে যেভাবে রাজনৈতিকীকরণ করা হয়েছে। বিসিবিতে তো ধারাবাহিকতা ভাঙার কোনো কথা ছিল না। যদি বিসিবিতে রাজনৈতিকীকরণ না করা হতো, তাহলে দেশে পরিবর্তন আসলেও বিসিবি তার মতোই থাকতে পারতো, ধারাবাহিকভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারতো। আমি যখন দায়িত্ব নিলাম, তখন বিসিবির পরিচালকদের পাওয়া যাচ্ছিল না। কারও সঙ্গে যে পরামর্শ করব, এমন একটা লোক পর্যন্ত ছিল না। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে, গঠনতান্ত্রিক অনেক জটিলতা ছিল। আইসিসির যে ফ্রেমওয়ার্ক আছে তার মধ্যে থেকে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিসিবিতে পরিবর্তন এনেছি।’
এদিকে স্টেডিয়ামগুলোর অধীনে থাকা দোকানগুলো নিয়ে অনিয়ম বন্ধ করতে নতুন কমিটি করার কথাও জানিয়েছেন তিনি। কমিটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নতুন করে বন্টন করবে দোকান।।
আসিফ বলেন, ‘স্টেডিয়াম মার্কেটের দোকানগুলো নিয়ে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের পরামর্শক্রমে নতুন করে বন্টন করা হবে। আমাদের স্টেডিয়ামগুলোতে যে দোকানগুলো রয়েছে, সেখানে সরকার খুবই নামমাত্র ভাড়া পায়। কিন্তু আসলে চার-পাঁচটা চুক্তি হয়ে গেছে এক-একটা দোকানে। বারবার হাতবদল হতে হতে দেখা যায় সরকার পায় ৭-৮ হাজার, কিন্তু আসল ভাড়া ২ লাখের কাছাকাছি। সে জায়গাগুলোতে পরিবর্তন আনার জন্য আমরা একটা কমিটি করেছিলাম। সে কমিটির প্রস্তাবনা দাখিল হবে বলে আমি জানতে পেরেছি। প্রস্তাবনার ভিত্তিতে আমরা একটা ব্যবস্থামূলক সিদ্ধান্ত নিব।’
(ঢাকাটাইমস/১৭ নভেম্বর/এনবিডব্লিউ)
মন্তব্য করুন