বোরো ধানের বাম্পার ফলন: সোনালি শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন, ফুটল হাসি

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৩, ০৯:১৮ | আপডেট: ০৮ মে ২০২৩, ০৯:২৪

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)

উত্তরের জনপদ নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। এবার ভালো ফলন হওয়ায় মনের আনন্দে ধান কেটে মাড়াই করছেন তারা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ ও উওরাঞ্চল বিশেষ করে নাটোরের লালপুর, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ, চিলাহাটি, ডোমারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান কাটা শ্রমিক এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আসতে শুরু করেছেন। 

উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মাঠ জুড়ে পাকা ধানের সোনালি রঙের সমারোহ দেখা গেছে। এছাড়া বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষক খুশি।

উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী, পাঁচুপুর ও বিশা ইউনিয়ে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। 

এবারে বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকদের বোরোচাষে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। বিশেষ করে বীজতলা থেকে ধান রোপন ও পরিচর্যা সব মিলিয়ে মাঠে মাঠে কৃষকের ধান এখন দর্শনীয় হয়ে উঠেছে। অনেক মাঠে ধান পাকতে শুরু করেছে। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন পুরোদমে বোরো ধান কাটতেও শুরু করেছে। তারপরও অধিকাংশ মাঠগুলোতে ধানের শীষের সঙ্গে এখন দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠের পর মাঠ সোনালী রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকেই পুরোদমে শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। 

উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃষক মো. আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, ‘আমি এ বছর ৬ বিঘা জমিতে  বোরো লাগিয়েছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে যথাসময়ে ভালো পরিচর্যা করায় আমার জমিতে ধান ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যেই ধানকাটা শুরু করেছি, ফলনও ভালোই হচ্ছে।’ 

উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক মো. আজাদ সরদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এবার ১২ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। ধানকাটা শুরু করেছি, ফলনও ভালোই হয়েছে। আশাকরি বাজারে দামও ভালো পাবো।’

উপজেলার ভবানীপুর-মির্জাপুর হাটের ধান ব্যবসায়ী মো. আবু জাফর আলী খাঁন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘গত হাটে তেমন ধান আমদানি শুরু হয়নি। তবে টুকটাক বেচা-কেনা হয়েছে। আশা করছি দু-চারদিনের মধ্যে পুরোদমে ধান আমদানি শুরু হবে।’

শাহাগোলা ইউনিয়নের ভবানীপুর ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদ হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘অধিক ফলেন জন্য পরিমিত সার ব্যবহার, পানি সাশ্রয় এবং সার্বিক পরিচর্যায় কৃষকদের সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছি। এবার আত্রাই উপজেলার কোথাও মাঝড়া পোকার আক্রমণ নেই। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ২২ মে থেকে বাজারে আসছে নওগাঁর আম

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপস চন্দ্র রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বোরো চাষের শুরু থেকেই ভাল মানের বীজ, জমির উর্বরতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি এলাকাতে ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। ফলনও বাম্পার হচ্ছে। তারপরও যেসব জমির ধান ৮০ ভাগ পেকে গেছে ওই সব জমির ধান দ্রুত কেটে নিতে আমরা কৃষককে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি।’ 

(ঢাকাটাইমস/০৮মে/এসএম)