দুরন্ত বিপ্লবের মা মারা গেছেন, ‘ছেলের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচিত না হওয়া নিতে পারেননি তিনি’

প্রকাশ | ২৮ মে ২০২৩, ১১:৩৬ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৩, ১১:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুরন্ত বিপ্লবের মা রোকেয়া আক্তার খাতুন (৭৩) মারা গেছেন। তিনি দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যুর সঠিক রহস্য উন্মোচিত না হওয়া নিতে পারেননি বলে দাবি পরিবারের। 

শনিবার রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান। 

রবিবার সকালে ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুরন্ত বিপ্লবের ছোট বোন শাশ্বতী বিপ্লব। 

আরও পড়ুন>> বাড্ডার রেনু হত্যাকাণ্ড: সাক্ষীরা আসছে না, কবে শেষ হবে বিচার?

দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু নিয়ে তার বোন শাশ্বতী বিপ্লবের সম্পাদনায় ‘জাস্টিস ফর দুরন্ত বিপ্লব’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছে, যেটিকে ‘দুরন্ত বিপ্লব হত্যাকাণ্ডের ডকুমেন্টারি এভিডেন্স বা দালিলিক সাক্ষ্য’ হবে বলে দাবি করছে তার পরিবার।

শনিবার দূরন্ত বিপ্লবের জন্মদিনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বইটির প্রকাশনা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সংবাদ সংবাদ সম্মেলনে  দুরন্ত বিপ্লবের মা উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুরন্ত বিপ্লবের মা। ছেলে দুর্ঘটনায় মারা যাননি উল্লেখ করে তিনি এর পক্ষে নানা বিষয় তুলে ধরেন রোকেয়া আক্তার।

রোকেয়া আক্তার বলেছিলেন, ‘তার সার্কেলের লোকজন, যাদের সঙ্গে চলাফেরা করত, এদের মধ্যেই কারো স্বার্থে আঘাত লেগেছে, সে কারণে তাকে হত্যা করেছে।’

সংবাদ শেষে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। 

শাশ্বতী বিপ্লব ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলন থেকে নামার সময় মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে আমরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিই। তখন হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে মা বলেন, দরকার নেই। আমি বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নিলে ঠিক হয়ে যাবে। এরপর বাসায় গিয়ে মা ঘুমিয়ে পড়েন। রাতে আটটা-নয়টার দিকে উঠে রাতের খাবারও খান। এর কিছুক্ষণ পর থেকে তিনি আবার অসুস্থবোধ করেন।’

তিনি জানান, অসুস্থ বোধ করার পর মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটির বাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বারডেম হাসপাতালে নেয়ার পথে শেরাটন হোটেলের সামনে পৌঁছার পর তিনি মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ‘আমার ভাই দুরন্ত বিপ্লব ছিলেন মায়ের বড় সন্তান। খুব আদরের সন্তান। মূলত আমার ভাইয়ের মৃত্যুর সঠিক রহস্য উন্মোচন না হওয়া আর এর পেছনে দিনরাত পরিশ্রম তিনি আর নিতে পারেননি।’

২০২২ সালের ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জ থেকে মোহাম্মদপুরে মায়ের বাসায় আসার পথে নিখোঁজ হন দুরন্ত বিপ্লব। এ বিষয়ে ৯ নভেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে পরিবার। পরে গত ১২ নভেম্বর বিকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা ঘাট এলাকার বুড়িগঙ্গা থেকে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনরা ওই লাশটি দুরন্ত বিপ্লবের বলে শনাক্ত করেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশও দুর্ঘটনায় বিপ্লবের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল। এরপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে পিবিআইও জানায়, দুর্ঘটনাজনিত কারণে দুরন্ত বিপ্লবের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই বক্তব্য বারবার অস্বীকার করে পরিবার দাবি করে আসছে, দুরন্ত বিপ্লবকে হত্যা করা হয়েছে।

দুরন্ত বিপ্লব কয়েকবছর ধরে কেরানীগঞ্জের বাস্তা এলাকায় সোনামাটি এগ্রো ফার্ম নামে একটি কৃষি খামার চালাতেন। 

(ঢাকাটাইমস/২৮মে/এএ/এফএ)