কালিয়াকৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: সকাল ৮টা থেকে রোগীর দীর্ঘ লাইন, ডাক্তার বসেন ১০টায়
প্রকাশ | ০৮ জুন ২০২৩, ১২:৩৯ | আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩, ১২:৫৮

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ৮টা থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেলেও চিকিৎসকরা আসেন ১০টায়। এতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সময় স্বল্পতায় অনেক রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যান।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানে মেলে এর সত্যতা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগসহ অন্যান্য কক্ষ খোলা হয়। রোগীদের উপস্থিতি বাড়লে সকাল ৯টার দিকে খোলা হয় টিকিট কাউন্টার। কিন্তু টিকিট কেটেও চিকিৎসকের দরজায় অপেক্ষা করতে হয় রোগীদের। অনেক সময় সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও কোনো ডাক্তার আসেন হাজিরা দিতে। এর ফলে টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সেবা পান না রোগীরা।
সবচেয়ে বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নাজমুন নাহার ইতি ও গাইনি চিকিৎসক কুহু মুর্শীদির বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজমুন নাহার ইতি হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকার কথা থাকলেও তিনি বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন। চেম্বার করেন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে। আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন নিজের ইচ্ছেমতো সময়ে। নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মোট সাড়ে ছয় ঘন্টা রোগী দেখার কথা থাকলেও তা করেন না ওই চিকিৎসক।
একই অভিযোগ গাইনি চিকিৎসক কুহু মুর্শীদির নামেও। তিনি কালিয়াকৈর বাইপাস এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চেম্বার করেন। সরকারি চাকরি করলেও স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ে ওই প্রাইভেট হাসপাতালেই তাকে বেশি দেখা যায়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডালিয়া আক্তার, নুরজাহান বেগম, সুমাইয়া খাতুনসহ কয়েকজন নারী রোগী ঢাকা টাইমসকে বলেন, সকাল সাড়ে নয়টায় এসে টিকিট কেটে দাঁড়িয়ে আছি। অথচ এখন ১০টার বেশি বাজে কিন্তু গাইনি ডাক্তার আসেননি। শুনেছি দুপুর ১টার আগেই রোগী দেখা বন্ধ করে দেন। এর কারণে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও বেশিরভাগ রোগীই ডাক্তার দেখাতে পারেন না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজমুন নাহার ইতির মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, হাসপাতালে একেক জনের ডিউটি একেক সময়ে। আমার ডিউটি সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গাইনি চিকিৎসক কুহু মুর্শীদির কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দিয়ে নম্বর ব্লক করে দেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকারি হাসপাতালের কার্যক্রম মূলত সকাল ৮টা থেকে শুরু করে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত চলে। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ না থাকে এবং কেউ দেরি করে আসেন তাহলে বিষয়টি মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় মেরিন ড্রাইভ সড়কে ঝরল তিন প্রাণ
জেলা সিভিল সার্জন খাইরুজামান ঢাকা টাইমসকে জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/এসএম)