রাঙ্গুনিয়ায় অধিক লাভের আশায় আগাম মুলাচাষ 

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৪৭| আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৫:৫৭
অ- অ+

কার্তিক-অগ্রহায়ণ ঋতু বৈচিত্রে হেমন্তকাল। কাশফুলের ছোয়ায় ঋতু পরিবর্তন শরতের আগমন গ্রামীন দৃশ্য মনোরম করেছে। শরতে বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি মুলা। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ইছামতি-কর্ণফুলীর চরজুড়ে অধিক লাভের আশায় আগাম মুলাচাষ করেছেন কৃষক। উত্তর চট্টগ্রামের সবজির সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার রোয়াজারহাট, ইছাখালী, গোচরা বাজার, শান্তিরহাট, পদুয়া রাজারহাট, রানিরহাট, মোগলেরহাট ছাড়াও স্থানীয় বাজারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে এসব মুলা। বাজারে চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক।

ফলন ভালো হওয়ায় এবং বাজারে দাম ভালো থাকায় কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ফলে বৃষ্টি-বন্যার ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা।

চট্টগ্রামের অন্যতম সবজিভান্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়া কর্ণফুলী-ইছামতি নদী ছাড়াও শাখানদীর চরজুড়ে অন্যান্য বছরের মতো এবারও গ্রীষ্মকালীন নানা জাতের সবজির আবাদ করেছিলেন কৃষক। কিন্তু অতিবৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট কয়েক দফা বন্যায় কৃষকের সর্বনাশ হয়েছে। অধিক লাভের আশায় সবজি চাষ করে লোকসানের শিকার হয়েছেন তারা।

অনেকে একাধিকবার চারা, বীজ রোপণ করেও ফলনের দেখা পাননি। ফলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মুলাসহ বিভিন্ন জাতের শীতের সবজির আগাম চাষ করেছেন। কৃষক এখন সবজির আবাদ নিয়ে মহাব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

একসময় জাপানের বিখ্যাত তাসাকি সান জাতের মুলার মাধ্যমে এ দেশে উচ্চফলনশীল মুলার আবাদ শুরু হলেও এখন মুলার প্রায় ২৫টি জাত চাষ হচ্ছে। দক্ষিণ ঘাটচেক এলাকর মূলাচাষি মো. হেলাল বলেন, ‘এবার তিনি জমিতে আগাম এভারটপ হাইব্রিড জাতের মুলাচাষ করেছেন। এ জাতের মুলা পানি শোষণ করতে পারে। ফলে বৃষ্টির দাপট থাকলেও মুলার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। নতুন জাতের এসব মুলা খেতেও সুস্বাদু।’

তিনি বলেন, ‘মুলাচাষ করতে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে আমি লক্ষাধিক টাকার মুলা বিক্রি করেছি। আরো প্রায় এক লাখ টাকার মুলা বিক্রি করতে পারবো। আগাম হওয়ায় এবং বাজারে মুলা কম থাকায় বেশ ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে।’ রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার শীল জানান, মূলা শীতকালীন সবজি। এক সময় কৃষক শুধু শীতেই মুলার চাষ করতেন। ওই সময় দেশে দুই জাতের মুলা চাষ হতো। এখন বাজারে অনেক জাতের মুলা রয়েছে। যেগুলো পুরো বছরই চাষ করা যায়। বর্তমানে বাজারে উন্নত জাতের কিছু মুলা রয়েছে, যেগুলো জমিতে পানি জমে না থাকলে বৃষ্টি হলেও তেমন কোনো সমস্যা হয় না।

এসব জাতের মুলার পানি শোষণের ক্ষমতা রয়েছে। তবে অতি মাত্রায় বৃষ্টি হলে এবং খেতে পানি জমে থাকলে মুলার ক্ষতি হয়। রাঙ্গুনিয়া ইচামতি-কর্ণফুলীর উভয় চর, শীলকখাল, কোদালা, সরফভাটা, পোমরা, পারুয়া, বেতাগী, মরিয়মনগর, হোসনাবাদ কুরমাইকুলখাল, ইসলামপুর, রাজানগর দক্ষিণ রাজানগরে ঘাগড়া খালের চরে কৃষক সারা বছরই কম বেশি মুলার চাষ করে থাকেন। এখানকার কিছু কৃষক বেশি লাভের আশায় বর্ষাকালেও মুলাচাষ করে থাকেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, ‘এ সময়ে বৃষ্টি থাকলেও কৃষক মাঠে নেমে পড়েছেন। শুরুতে যারা ঝুঁকি নিয়ে মুলাচাষ করেছেন তারা লাভবান হয়েছেন। অবশ্য এরই মধ্যে ইছামতি-কর্ণফুলী চরে মুলা ছাড়াও বেগুন, বরবটি, শিম, ঢেঁড়স, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, চিচিঙ্গা, শসা, লাল শাক, মুলা শাক, সরিষা শাক, পুঁইশাকসহ নানা জাতের সবজির আবাদ করেছেন অনেকে।’

(ঢাকা টাইমস/২৬নভেম্বর/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিশ্বের ‘দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট’ হোসে মুজিকা মারা গেছেন
যত্রতত্র জনস্বাস্থ্যের টিউবওয়েল, রাঙ্গুনিয়ায় পানির তীব্র সংকট
বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তনে চট্টগ্রাম বন্দরই মূল ভরসা: প্রধান উপদেষ্টা
দুদকের মামলায় জামিন পেলেন জুবাইদা রহমান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা