পোকা দমনে আলোক ফাঁদে আগ্রহী কৃষকরা

পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে ধান ক্ষেতকে রক্ষা করতে কৃষকদের জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হচ্ছে ‘আলোক ফাঁদ’। পদ্ধতিটি সহজলভ্য ও খরচ কম হওয়ায় দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার কৃষকরা কীটনাশকের ব্যবহারের পরিবর্তে এই কৃষিবান্ধব পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বর্তমানে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৩৬টি ব্লকে সন্ধ্যায় আমন ফসলের ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি যাচাইয়ের জন্য এই আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার উদ্যোগে এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেতের আইলে কোথাও পানি ভর্তি পাত্রে, কোথাও কাগজের উপর আলো জ্বালিয়ে ধানে আক্রমণাত্মক বিভিন্ন পোকা ধরা হচ্ছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা নিজেই তাদের আমন ক্ষেতে কোন ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে তা স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সহযোগিতায় প্রয়োগ করতে পারছেন। এতে করে পোকার আক্রমণের আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারছেন কৃষকরা।

এই আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে এলাকার অনেক কৃষক বর্তমানে খুব কম কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে কৃষকদের খরচ অনেকটাই কমে আসছে এবং ধানের উৎপাদনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কার‌্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলায় ধান ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণে প্রায় প্রতিদিন একযোগে সন্ধ্যায় বিভিন্ন ইউনিয়নে এই আলোক ফাঁদ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের কৃষক জাকির, ফজলুর রহমান ও নশরতপুর গ্রামের কৃষক রহিদুল, সাইদুর, নজরুল, রাজ্জাক, বেলাল বলেন, ‘আমরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে অনেক উপকৃত হয়েছি। সহজলভ্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ক্ষেতের পোকামাকড় নিধন করতে পারছি। পরিবেশবান্ধব এই পদ্ধতি অনুসরণে খরচও অনেকটাই কমে এসেছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, এটি একটি সহজলভ্য পদ্ধতি। কৃষকরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই ধানের ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন। অপরদিকে কম খরচে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩অক্টোবর/পিএল)