ক্ষুধার্ত ছিন্নমূল শিশুর দৃশ্য ভাইরাল

কুষ্টিয়া শহরের একজন ছিন্নমূল শিশুর দৌড়ে এসে ইফতার নেওয়ার দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

বুধবার শহরের এনএস রোড এলাকায় প্রতিদিনের ন্যায় অসহায় মানুষের মাঝে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছিলেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ। এসময় দেখা যায়, একটি ছোট্ট শিশু দৌড়ে তার দিকে এগিয়ে আসে। পেছন থেকে দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি হলেও সামনে আসা ওই শিশুটিকে পেয়ে তিনি কাছে আগলে নিলেন। আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। হাতে তুলে দিলেন ইফতারের প্যাকেট।

ছোট্ট এই শিশুটির দৌড়ে আসার দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দৃশ্যটি অন্য আর মানুষের হৃদয় কাড়ার পাশাপাশি হৃদয়স্পর্শ করে ছাত্রলীগ সম্পাদক সাদ আহমেদকেও।

করোনার মধ্যে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি নিজের সামর্থের মধ্যে থেকে যতটুকু পারছেন, তিনি রমজানে সহায়তা করছেন। ইফতারসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি রান্না খাবার তুলে দিচ্ছেন ছিন্নমূল অসহায় মানুষের মাঝে। রোজার শুরু থেকেই এমন সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেন।

সম্প্রতি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কুষ্টিয়া ছাত্রলীগ সম্পাদক সাদ আহমেদ হয়ে উঠেছেন সকলের কাছে প্রিয় মানুষ।

ক’দিন ধরেই ছাত্রলীগ নেতা সাদ আহমেদের এমন কাজে দলীয় তো বটেই ভিন্ন দল তথা ভিন্নমতাবলম্বীদের কাছেও ইতিবাচক মনে হয়েছে।

কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের একাধিকবার সভাপতির দায়িত্বে থাকা জনপ্রিয় নেতা বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা মাযহারুল আলম সুমন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখেছেন সাদ আহমেদের এমন মানবিকতার দৃশ্য। তিনি উল্লেখ করেন- ‘আমি শুরু করেছিলাম আর তুমি শেষ করবে।’

শুভ আহমেদ নামে একজন লিখেন- ‘সাদ আহমেদ’র মত ছাত্রলীগ নেতার কর্মকাণ্ডে অভিভূত। তার ধারাবাহিক কর্মকাণ্ড আমাদের বিবেককে জাগ্রত করেছে।’

সজিব হাসান নামে একজন লিখেছেন- ‘মানবতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সাদ আহমেদ।’

রাজিব সরকার অভি লিখেছেন- ‘জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে এভাবেই এগিয়ে যান তেজদীপ্ত চরণে।’

সানজিদ হাসান অন্তনু লিখেছেন- ‘ভাই (সাদ আহমেদ) আপনাকে দেখে অনেক কিছু শেখার আছে।’

কেউ কেউ আবার সাদ আহমেদকে মানবতার ফেরিওয়ালা বলে আখ্যা দিয়েছেন।

এমন দৃশ্য কখনোই ভুলার নয় বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন জেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ।

সাদ আহমেদ জানান, কারো বাহবা পেতে মানুষের কল্যাণে কাজ করছি না। একজন মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে সেই মূল্যবোধ থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি মাত্র। তবে বুধবার যখন আমি কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে রোজাদার মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করছিলাম, তখন ৫/৬ বছরের এক ছোট্ট শিশু আমার দিকে দৌড়ে আসে- একটি প্যাকেটের জন্য। বিষয়টি আমাকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। ওই শিশু আমাকে বলে আমার ক্ষুধা লেগেছে আমাকে একটি প্যাকেট দিবেন? যখন ওই শিশুটির হাতে একটি প্যাকেট তুলে দিলাম, তখন শিশুটির অনুভূতি দেখে আমার চোখে পানি চলে আসে। আমি শিশুটিকে জড়িয়ে ধরে বলি তোর কয়টা প্যাকেট লাগবে- আমি দিব। এই বলে শিশুটিকে জড়িয়ে ধরি।

সাদ আহমেদ বলেন, আমি ছাত্ররাজনীতি করতে এসেছি নিজেকে জাহির করতে নয়। বড় হয়েছি বাবা-মায়ের আদর্শ নিয়ে। তবে রাজনীতিতে আমার আদর্শ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। তারা আমাকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। শিখিয়েছেন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নয়, ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ছাত্রলীগকে প্রশংসিত হতে হবে। এমন চিন্তা চেতনা থেকে আমার এগিয়ে চলা।

(ঢাকাটাইমস/১মে/এলএ)