বাবা-মা হিসেবে এবারের ঈদ আরো কষ্টের

মির্জা গোলাম ইয়াহিয়া
  প্রকাশিত : ২৪ মে ২০২০, ১৬:৫৭
অ- অ+

ভালো সময় হোক আর খারাপ সময় হোক সময়কে আটকে রাখা যায় না। ক্যালেন্ডারের পৃষ্ঠা পরিবর্তন হতেই থাকে। তাই তো করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে আমাদের মধ্যে ঈদ চল এসেছে। কালই ঈদের দিন। আজ চাঁদ দেখা যাবে আকাশে। তবে ৩০ রোজা হলে চাঁদ দেখার চমকটা কমে যায়। এবার সেটাই হচ্ছে।

চাঁদ দেখা নিয়ে কিশোর কিংবা যুবক বয়সে সবার মধ্যে যে উদ্দামতা দেখা যায়। সেটা আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে অতোটা ছিলো না। আমরা বাবা-মায়ের গণ্ডিতে থাকতেই পছন্দ করতাম। বাসা থেকেই ঈদের চাঁদ দেখার চেষ্টা করতাম। চাঁদ দেখে আনন্দিত হতাম।

তবে তারপর পটকাবাজি করার বিষয়টি আমাদের মধ্যে ছিলো না। চাঁদরাতে সারারাত হয়তো জেগেই থাকতাম। কিন্তু বাইরে বাইরে টইটই ঘুরে বেড়ানোর মতো সাহসী ছিলাম না।

ঢাকায় চাঁদরাতের সন্ধ্যায় ঈদ শপিংয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি অনেক বছর ধরেই চলছে। মধ্যরাত পর্যন্ত কেনাকাটা করা নগরবাসীদের একটি শখ। এবার করোনাভাইরাস ভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে হাজির হয়েছে। বড় বড় শপিংমল বন্ধ। যেগুলো খোলা সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে বেচাকেনা।

আবার আজকে চারটার মধ্যেই মার্কেট বন্ধ হয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের পর এটাই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশে ঢাকা শহরে কোনো চাঁদরাত বলে কিছু থাকলো না। এ অবস্থার মধ্যে আমার মনও ঈদের কেনাকাটায় সায় দেয়নি। তাই আমাদের ঈদ শপিং পুরোপুরি বন্ধ রেখেছি।

সরকার অনেক চেষ্টা করেও ঈদে মানুষের নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়ার ব্যাপারটি আটকে রাখতে পারেনি। যদিও বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ। তবুও অনেকেই বাড়ির দিকে ছুটে গেছেন। যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই পৌঁছে গেছেন বাড়িতে। তবে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অনেক মানুষ বাড়ি চলে গেছে। এবার তাই নতুন করে ঢাকা ফাঁকা হয়েছে, এমন নয়। দুই মাস ধরেই ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ভুতুড়ে অন্ধকার নেমে আসে অনেক সড়কে। যেগুলো এখন ঈদের যানজটে ভরপুর থাকতো।

ঈদ সবসময় ঢাকায় থাকি। তাই ঈদে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার যে আনন্দ - সেটা কখনোই পাইনি। সেই আনন্দ থেকে বঞ্চিত আমরা। কিন্তু আমার ছেলে সেই আনন্দ পেয়ে থাকে। প্রতি ঈদে ও ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ঢাকায় আসে। এটা ছেলেটার জীবনে বড় আনন্দ।

এবার লকডাউনে আটকে আছে সেখানে। আমাদের কাছে আসতে পারছে না, এ নিয়ে ফোনে অনেক আক্ষেপ করেছে। করোনাকালের ঈদে ছেলেমেয়ে আমেরিকায় থাকছে। আর আমরা ঢাকায়। তাই বাবা-মা হিসেবে আমাদের জন্য এবারের ঈদ আরো কষ্টের।

এর পরের ঈদ সবার জীবনে স্বাভাবিক আনন্দ ফিরে আসবে। শুধুই এই কামনা করে যাচ্ছি। এই প্রার্থনা আল্লাহর দরবারে। সবাই ঘরে থাকুন। পরিবার নিয়ে ঈদের আনন্দ করুন। ঈদ মোবারক।

লেখক: হেড অব পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া ডিভিশন, সিটি ব্যাংক

ঢাকাটাইমস/২৪মে/এসকেএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মা হারালেন অর্ষা, হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিনেত্রীর স্বামীর ক্ষোভ
নারী কেলেঙ্কারির ভিডিও ফাঁসের পর আত্মগোপনে শরীয়তপুর ডিসি!
নতুন বাজার অবরোধ ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের
৫৭ দেশের সহস্রাধিক মুসলিম নেতা আজ বৈঠকে বসছেন তুরস্কে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা