শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩ ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ
মতলব দক্ষিণ উপজেলায় আশ্বিনপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম ও দশম শ্রেণির তিন ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ছাত্রীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে মৌখিকভাবে ওই অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. ইয়াছিন মিয়াজী (৪০)। তিনি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। তার বাড়ি উপজেলার ঘোড়াদারী গ্রামে। শ্লীলতাহানির শিকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজন নবম শ্রেণির ও একজন দশম শ্রেণির।
বিদ্যালয়টির একাধিক শিক্ষক, ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার ওই বিদ্যালয় ছুটির পর ওই শিক্ষক বিদ্যালয়টির পাশের একটি কক্ষে ছাত্রীদের কোচিং করাচ্ছিলেন। কোচিং শেষে ওই তিন ছাত্রীকে তিনি পাশের একটি কক্ষে আলাদা আলাদা ডেকে নেন এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে জোরপূর্বক তাদের শ্লীলতাহানি করেন। ছাত্রীরা বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানালে ওই তিন পরিবারের লোকজন বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানকে জানান এবং ঘটনাটির বিচার চেয়ে তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
সূত্রটি আরও জানায়, ঘটনাটির সুষ্ঠু মীমাংসার আশ্বাস দিলেও ওই অধ্যক্ষ নানা ভাবে কালক্ষেপণ করেন এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। উল্টো অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ওই তিন ছাত্রীকে নানাভাবে হুমকি দিতে থাকেন। উপায় না দেখে ওই তিন ছাত্রী ও তাদের পরিবার শনিবার দুপুরে ইউএনও ফাহমিদা হকের কাছে এসে এ ব্যাপারে মৌখিকভাবে অভিযোগ করে।
ওই তিন ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, কোচিং করতে গেলে শিক্ষক মো. ইয়াছিন মিয়াজী দীর্ঘদিন ধরে তাদের শ্লীলতাহানি ও যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে আসছেন। গত শনিবার তাদের তিনজনকেই আলাদা আলাদাভাবে ডেকে নিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। ঘটনাটি কাউকে না জানাতে শাসিয়ে দেন। জানালে তাদের বড় ধরনের ক্ষতি করারও হুমকি দেন। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং বিদ্যালয়ে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন। ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। হুমকির ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক মো. ইয়াছিন মিয়াজীকে মোবাইলে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক বলেন, ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ সত্য এবং অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নানের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি উপজেলায় ব্যাস্থ আছি পরে কথা বলবো।
নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক বলেন, অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগটির অনুলিপি পেয়েছেন। এ ছাড়া ওই ছাত্রীরা আজ তাঁর কাছে মৌখিকভাবেও অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি তদন্তে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলীকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, ছাত্রীদের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তাঁর থানায় একটি জিডি প্রক্রিয়াধীন। জিডি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/এআর)