দিনাজপুরে প্রতিদিন কোটি টাকার কলা বিক্রি
ধানের জেলা দিনাজপুরে কলা চাষ বাড়ছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এরার ব্যাপকভাবে হয়েছে কলার চাষ। উত্তরাঞ্চলের অন্যতম কলার হাট এখন বসছে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার দশমাইলের সাদিপুরে। এ হাটে প্রতিদিন কেনা-বেচা হচ্ছে প্রায় কোটি টাকার কলা।
কয়েক বছর ধরে কলা চাষ করে উৎপাদন ও দাম ভালো পাওয়ায় ধানের জেলা দিনাজপুরে কলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের। দেশি সাগর, মেহের রাধিকা সাগর ও মালভোগ কলার চাষ হচ্ছে এ জেলায়। কলা চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
এখন চলছে কলা কেনা-বেচার ধুম। প্রতিদিন কলা চাষিরা হাজার হাজার কাইন কলা নিয়ে আসছেন এ হাটে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ হাটে আসছেন পাইকার-ব্যবসায়ীরা।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে কলা নিতে আসা পাইকার মো. মোকছেদ ব্যাপারী জানান, গতবারের চেয়ে এবার কলার দাম বেশি। প্রকার ভেদে প্রতি ১শ কাদি কলা এবার ক্রয় করতে হচ্ছে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায়। যা গতবার কিনেছেন ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায়। এবার পরিবহন খরচও বেশি। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন খরচ দেড়গুণ বেড়েছে। আগের মতো আর লাভ নেই, কলা কিনে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রাক বোঝাই করছেন অসংখ্য শ্রমিক। দিনের আলো সূর্য উঠার সাথে সাথে কাহারোল উপজেলার দশমাইলের সাদিপুরে ট্রাকে কলা বোঝাই, আর ট্রাকে করে এ কলা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে।
অস্থায়ী এই কলার হাটের ইজারাদার মো. মিজানুর রহমান জানান, হাটের দু’পাশে দোকানপাট গড়ে ওঠায় জায়গার স্বল্পতায় কলা ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। ট্রাকে কলা লট করতে হিমশিম খাচ্ছেন পাইকার ও ট্রাক চালকরা। অনেক সময় মহাসড়কেও ট্রাক থামিয়ে কলা তোলায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত মৌসুমের ৩ মাস এ হাটে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন কয়েক শ শ্রমিক। তারা প্রতিদিন কলা বহন ও উঠার কাজে কায়িক শ্রম দিয়ে ৫০০ থেকে হাজার টাকা উপার্জন করছেন। এ উপার্জন দিয়ে তাদের সংসারে প্রায় বছরের চাহিদা পূরণ হয় বলে জানালেন শ্রমিক আবেদ আলী ও নরেশ চন্দ্র।
জেলায় এবার প্রায় ৩ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে হয়েছে কলার চাষ।
কলা চাষি আব্দুল করিম জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে এবার কলা চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে লাখ টাকার কলা বিক্রিও করেছেন। এখনো এক থেকে দেড় লাখ টাকার কলা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান জানান, দিনাজপুরের মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের উপযোগী। তাই এ কলা চাষে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষক কলা চাষে এবার বেশ লাভবান।
এ কলা চাষে সংশিষ্ট বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং উৎপাদিত কলার দাম ভালো পেলে আগামীতে এ অঞ্চলে কলা চাষের পরিধি আরও বেড়ে যাবে এমনটাই মনে করছে কৃষিবিদরা।
(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/এসএ)