ডিবি অফিস থেকে ছাড়া পেয়ে ফেসবুকে যে ঘোষণা দিলেন দুই সমন্বয়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০১ আগস্ট ২০২৪, ১৭:৫৯
অ- অ+

ছয় দিন পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজত থেকে ছাড়া পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপরই সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে নেমে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে নিজেদের ফেসবুক আইডিতে ঘোষণা দিয়েছেন দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম। তারা অবিলম্বে সবার মুক্তি চেয়েছেন।

সরকার শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হবে না বলেও কথা রাখেনি বলে নিন্দা জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার বিকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই মুক্ত নই। এই গণগ্রেপ্তার গণঘৃণার নামান্তর। আমাদের মুক্তি তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটিও মুক্তি পাবেন।

তিনি বলেন, এই গণগ্রেপ্তার কেবল নিরপরাধ মানুষের অধিকার হরণ নয়, বরং আমাদের সমগ্র সমাজের ওপর চাপিয়ে দেওয়া একটি নিষ্ঠুরতার প্রতিফলন। এটি মুক্তচিন্তা ও মানবাধিকারের প্রতি এক ভয়ানক আঘাত। আমাদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র ব্যক্তির মুক্তির জন্য নয়, বরং বৈষম্য, নিপীড়ন, গণগ্রেপ্তার এবং ছাত্র নির্যাতনের বিরুদ্ধে। এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

অন্যদিকে সারজিস আলম তার পোস্টে লেখেন, কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না। মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না৷ আপনারা কথা রাখেননি৷

আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আঘাত করেছেন। সারাদেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন৷ যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন৷ আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন! মাশরুর তার উদাহরণ৷

‘যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে৷ এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি৷ এমন তো হওয়া উচিৎ ছিল না!

কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন৷ সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুর সহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী৷’

সারজিস লেখেন, রিকশা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন৷ আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন৷ কী ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে? ৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায়। কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কীভাবে নিবৃত করবেন?

‘পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি৷ এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের ওপর নয়, পুলিশের ওপর নয় ৷ এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার ওপর৷ যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গনে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার ওপর৷ ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নেব৷’

‘পরিশেষে এটুকু বলতে চাই, এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবিলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই৷ যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে ততদিন এ লড়াই চলবে৷

ঢাকাটাইমস/০১আগস্ট/এসকে/ইএস

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এনবিআর বিলুপ্তির ব্যাখ্যা দিল সরকার
সরকার প্রধান হিসেবে প্রথমবার চট্টগ্রাম যাচ্ছেন ড. ইউনূস
ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার কার মাধ্যমে হবে তার সুরাহা কেন জরুরি 
জনতা ব্যাংকে টাস্কফোর্স সভা অনুষ্ঠিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা