তিতাসে ১১ কোটিতে সড়ক সংস্কার, বছর না যেতেই বেহাল!

সংস্কারের এক বছরের মধ্যেই কুমিল্লার গৌরীপুর-হোমনা সড়কের তিতাস অংশের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। চরম ভোগান্তি নিয়েও বিভিন্ন যানবাহনের চালক, যাত্রী ও পথচারীরা বাধ্য হয়ে চলাচল করছেন এই পথে।
নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সড়কটি সংস্কার করার অভিযোগ করে স্থানীয় লোকজন বলছেন, এ জন্যই সড়কটি দ্রুত ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ার পথে।
গৌরীপুর-হোমনা ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের সংস্কার ও উন্নয়নকাজ শেষ করতে গৌরীপুর রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের লেগেছিল প্রায় দুই বছর। নির্মাণকাজের ধীরগতির কারণে মানুষের দুর্ভোগেরও সীমা ছিল না। সংস্কার কাজ শেষেও সেই দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না তাদের।
নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি বাজার থেকে জিয়ারকান্দি ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে এখন ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। ফলে এ প্রধান সড়কে সব ধরনের যান চলাচল করছে ধীর গতিতে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানযটের, চরম ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রী-পথচারীরা।
জানা যায়, এ সড়ক দিয়ে তিতাস, হোমনা, মেঘনা, মুরাদনগর ও বাঞ্ছারামপুরের লোকজন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। ব্যস্ত এই সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গৌরীপুর-হোমনা সড়কের তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি, দড়িকান্দি, শিবপুর, মৌটুপী, গাজীপুর ও কেশবপুর অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দের। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দূরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ হাজার হাজার যানবাহন। বৃষ্টি হলে এসব গর্তে পানি জমে যায়। এসব গর্তে চাকা পড়ে অটোরিকশার মতো ছোট যানবাহন প্রায়ই উলটে যায়।
কুমিল্লা গৌরীপুর শাখা রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গৌরীপুর-হোমনা সড়ক সংস্কারে প্রকল্পটির কাজ পায় মোজাহেদ এন্টারপ্রাইজ। ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হয় ১৪ কিলোমিটার সড়ক।
কিন্তু সংস্কারের পর বছর না পেরোতেই সড়কটি ধীরে ধীরে বেহাল হয়ে পড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, সংস্কারে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় সড়কের এই বর্তমান দশা। সড়কের এই গর্তের কারণে আজকেও একটি ট্রাক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এই সড়কে সিএনজি অটোরিকশা চালান মাসুদ। তিনি বলেন, ‘রাস্তা নির্মাণের পর কয়েক মাস ভালোই চলছিল। কিন্তু তার পরই রাস্তায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। খানাখন্দের কারণে একটি গাড়ি থামিয়ে অপর গাড়িকে সাইড দিতে হয়।’ গর্তের কারণে প্রতিনিয়ত গাড়ির ঝাঁকিতে চালক-যাত্রীরা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
গৌরীপুর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ভূইয়া সড়কের এই অবস্থার জন্য বৃষ্টিকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘বিপুল অর্থ ব্যয়ে সংস্কার হওয়া সড়কের এই পরিণতির কারণ এ বছর প্রচুর পরিমাণ ও ঘন ঘন বৃষ্টি হয়েছে। বিটুমিনের রাস্তায় পানি জমে থাকলে দ্রুত তা নষ্ট হয়ে যায়।’
সড়কটি অতি দ্রুত মেরামতের জন্য তারা ইতিমধ্যে রাস্তায় নেমেছেন জানিয়ে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, ‘আশা করি অতীতের চেয়ে এবার কাজ ভালো হবে।’
(ঢাকাটাইমস/৮নভেম্বর/মোআ)
মন্তব্য করুন