বড় বিনিয়োগ করতে চেয়েও হাসিনা সরকারের অনাগ্রহে ফেরত যায় সৌদি আরামকো

সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি আরামকো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চাইলেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অনাগ্রহে ফিরে যায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান।
সৌদি-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে সৌদি রাষ্ট্রদূতের এমন বক্তব্য এলো। রবিবার (৫ জানুয়ারি) এ সেমিনারের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারে প্রধান কেন্দ্রবিন্দুর নাম সৌদি আরব। সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে দেশটি। সেদেশের রাষ্ট্রমালিকানাধীন তেল কোম্পানি আরামকো বিশ্বের বৃহত্তম এবং মূল্যবান তেল কোম্পানি। কেবল সৌদি আরবই নয় বৈশ্বিক জ্বালানি তেল শিল্পের কৌশলগত বৃহৎ কোম্পানিও আরামকো।
বাংলাদেশে কিছু মানুষ ব্যক্তিস্বার্থে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করে মন্তব্য করে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম তেল কোম্পানি আরামকো কয়েকবার বাংলাদেশে বিনিয়োগের চেষ্টা করেছে। তবে তাদেরকে স্বাগত জানানো হয়নি।’
‘অনেক বড় প্রকল্প সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে সুনির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ে গেলে আটকে থাকত। ব্যক্তিস্বার্থে এসব প্রকল্প আটকে ফেলা হতো বলে আমার ধারণা। একুয়াপাওয়ার যখন বাংলাদেশে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে আগ্রহী ছিল, তখন প্রতিষ্ঠানটিকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।’
সেমিনারে রাষ্ট্রদূত সৌদিআরব ও বাংলাদেশের অনন্য এক সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে দুদেশ একে অপরের ইস্যু নিয়ে কখনও কথা বলেনি বলেও মন্তব্য করেন।
সৌদি আরব দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির হাব গড়বে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ-সৌদি আরব সম্পর্ক শুধু জনশক্তি রপ্তানির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে তেল রপ্তানির হাব গড়তে আমরা বাংলাদেশে তেল রিফাইনারি কারখানা করতে চাই।’
আরামকোর মতো গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির বিনিয়োগ বাংলাদেশে আনা গেলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি জ্বালানি তেল নিয়ে চলমান সংকট কাটানো যেতো বলে মনে করা হয়।
সেমিনারে এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শুধু সৌদি কোম্পানি আরামকোই নয়, তাদের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি স্যামসাংকেও বিমানবন্দর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল হাসিনা সরকার। এমন ভুল নীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশের ঘাটতি রয়েছে স্বীকার করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, এতদিন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা যতটা বলা হয়েছিল, ততটা ছিল না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঠিক পরিবেশ দিতে বদ্ধপরিকর।
(ঢাকাটাইমস/০৫জানুয়ারি/ডিএম)

মন্তব্য করুন