মিরপুর কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জুন ২০২৫, ২২:১৪| আপডেট : ০৭ জুন ২০২৫, ১৫:১৯
অ- অ+

ঢাকার মিরপুর কলেজ শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পছন্দের প্রার্থীকে নেতা বানাতে অনিয়মের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পদবঞ্চিতদের।

গত ৪ জুন মওদুদ আহমেদকে আহ্বায়ক ও শরিফুল ইসলাম সুমনকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যের মিরপুর কলেজ ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি অনুমোদন দেয় ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদল।

অভিযোগ উঠেছে, এই কমিটিতে অনিয়ম ও মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন ছাড়াও যারা ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না, তাদের রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পদবঞ্চিত নেতা-কর্মী ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিগত দিনগুলোতে আন্দোলন-সংগ্রামে যারা সক্রিয়, ত্যাগী ও নেতৃত্বের যোগ্য ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ওই নেতা-কর্মীরা বলেন, কমিটির সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম সুমন ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে মিরপুর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান জুয়েল ইসলামের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সুমন ও তার সহযোগী মো. রাসেলসহ আরও কয়েকজন মিলে জুয়েল ইসলামকে মারধর করেন। একই সঙ্গে তাকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সে সময় ভাইরাল হয়।

শিক্ষককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ১০ নভেম্বর শরিফুল ইসলাম সুমন এবং মো. রাসেলের দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়।

সূত্র বলছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির ডাকা সমাবেশে অংশগ্রহণ করেননি শরিফুল ইসলাম সুমন। তাছাড়া দলের ডাকা হরতাল, অবরোধ, আন্দোলন কিংবা সাংগাঠনিক কোনো কার্যক্রমে অংশ নেননি। এর পক্ষে (অংশগ্রহণের পক্ষে) তিনি কোনো তথ্য, চিত্র কিংবা প্রমাণ দেখাতে পারবেন না। অথচ ৪ জুন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার আগ মুহূর্তে সুমনের স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয় এবং তাকে সদস্য সচিব করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, শরিফুল ইসলাম সুমন পদ বাগিয়ে নিতে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনকে একটি দামি ব্রান্ডের মোবাইল ফোন উপহার দেন। একই সঙ্গে বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে সদস্য সচিব পদ দখলে নেন।

আরও জানা গেছে, নবগঠিত কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম-আহ্বায়ক সালেহ আকরাম লিটন বিগত সময়ে ছাত্রদলের কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কমিটি ঘোষণার মাসখানেক আগে তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করেন।

কমিটির বাকি দুজন যুগ্ম-আহ্বায়কের একজন শেখ সিরাজ একসময় ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। মাঝে ছয় বছর তিনি নিষ্ক্রীয় ছিলেন। আর জি এম মাহমুদুল হাসান জুয়েল কখনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি নিষিদ্ধ ঠেকাতে জুয়েলের নেতৃত্বে একটি মিছিল হয়। কমিটি গঠনের আগে সক্রিয় হওয়া এই দুজনকেই ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কমিটিতে জুনিয়র-সিনিয়র নেতাদের সিরিয়াল রক্ষা করা হয়নি। অনেক জুনিয়রকে সিনিয়রের ওপরে পদায়ন করা হয়েছে।

পদবঞ্চিত একজন নেতা বলেন, কমিটির অনেকে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। যারা বিগত সময়ে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ও ত্যাগী ছিলেন, তাদের বাদ রেখে কমিটি করা হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতে দলের মধ্যে নেতৃত্ব সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করে নতুন করে কমিটি গঠন করতে হবে। তা না হলের দলের হাইকমান্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে।

কমিটি নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানতে এই প্রতিবেদক ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া দেননি তারা।

আর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, 'আমি প্রথম আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। যেসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো গুরুতর। আমরা অবশ্যই খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করব।'

(ঢাকাটাইমস/৬জুন/এসএস/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে
টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন রোনালদোর পর্তুগাল
বিজয়নগরে কোরবানির মাংস কাটা নিয়ে বড় ভাইকে হত্যার অভিযোগ দুই সহোদরের বিরুদ্ধে
গাজায় ঈদের তৃতীয় দিনে ইসরায়েলি হামলায় আরও শতাধিক নিহত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা