পৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে: গবেষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৯ জুন ২০২৫, ১৪:৩৮
অ- অ+

সুন্দর এই পৃথিবীতে বেশির ভাগ মানুষই দীর্ঘায়ু পেতে চান। দীর্ঘায়ু পেতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ এবং ফিট থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ ও ফিট থাকতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে তা হলো ডায়েট। অপরদিকে মানুষের কাছে মৃত্যু কখনওই কাঙ্ক্ষিত বিষয় নয়। কিন্তু মৃত্যুর মতো ধ্রুবসত্যকে এখনও অতিক্রম করতে পারেনি বিজ্ঞান।

কিছু কিছু মানুষ প্রতিনিয়ত বয়স কমানোর জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছেন। বয়সবৃদ্ধি এবং মানুষের আয়ুবৃদ্ধির জন্য নানা গবেষণাও চলছে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, এখন মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। কিন্তু বয়সবৃদ্ধির হারকে এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বিজ্ঞান।

বয়স ধরে রাখার জন্য নানা ওষুধ ও প্রসাধনী সংস্থার ব্যবসা সময়ের সঙ্গে ফুলেফেঁপে উঠেছে। একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, ২০২৪ সালে এই বাজারের বাণিজ্য ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা ছুঁয়েছে! আগামী ১০ বছরে তা ১০ হাজার কোটি স্পর্শ করতে পারে। এমতাবস্থায়, বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, গত ১০০ বছরের মধ্যে বর্তমান সময়ে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। নেপথ্যে রয়েছে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা।

বিশ্বে মৃত্যুর হারের দিকে চোখ রাখলে জানা যাচ্ছে, ২০০০ সাল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে তা ৮.৬ শতাংশ থেকে কমে ৭.৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও মানুষের বার্ধ্যক্যের সময়সীমার ক্ষেত্রে বিশেষ একটা পরিবর্তন ঘটেনি। বরং মানুষের বার্ধক্যের সময়কালও খানিক পিছিয়ে গিয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অফ সাদার্ন ডেনমার্কের গবেষক সিলভিয়ো প্যাট্রিসিয়ো তাঁর একটি গবেষণায় বার্ধক্যের হার প্রসঙ্গে নতুন তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। তার জন্য গবেষকেরা ২০১০ সালের একটি গবেষণা থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সেই গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, গত ১০০ বছরে বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে বার্ধক্যের হারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেনি। কিন্তু মানুষের গড় আয়ু এখন প্রায় ১০ বছর বেড়ে গিয়েছে।

বার্ধক্যের কারণে মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য সিলভিয়ো ডেনমার্ক ছাড়াও ফ্রান্স, সুইডেন, ইটালির মানুষদের তার গবেষণার অধীনে নিয়ে এসেছেন। প্যাট্রিসিয়ো তার গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ‘‘একই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে আমরা এমন কোনও তথ্য বা প্রমাণের সন্ধান পাইনি, যা থেকে দাবি করা যেতে পারে, বার্ধক্যের সময় বা হারের ক্ষেত্রে কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে।’’

সুস্থ জীবনযাপন সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রজন্মের ক্ষেত্রে মানুষের বার্ধক্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে একই রয়েছে। সুষম আহার, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত শরীরচর্চার মতো শর্তগুলি সেখানে আয়ুবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে মাত্র।

পরিসংখ্যান বলছে, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার ফলে মানুষের আয়ু বৃদ্ধি ঘটেছে। জাপানিজদের গড় আয়ু এখন ৯০ বছরের উর্ধে। মোনাকোর গড় আয়ু ৮৭ বছর, হংকং-এর গড় আয়ু ৮৫ বছর, সান মারিনোর গড় আয়ু ৮৪ বছর। দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, সুইৎজ়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, সিঙ্গাপুর-এর গড় আয়ু ৮৩ বছর। আমেরিকায় মানুষের গড় আয়ু ৭৭। বাংলাদেশের গড় আয়ু এখন ৭০ বছরের সামান্য বেশী। আর সবচেয়ে কম আয়ুর দেশ আফ্রিকা মহাদেশের চাদ। দেশটির মানুষের গড় আয়ু ৪৯ বছর। চাদে জন্মহারের চেয়ে মৃত্যুহার বেশি। এরমূল কারণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অপুষ্টি। আফগানিস্তান এবং জিম্বাবুয়ে, দুটি দেশের অধিবাসীদের গড় আয়ু ৪২।

আয়ু বৃদ্ধির মূল কারণগুলো হলো উচ্চমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা, প্রচুর স্বাস্থ্যকর, চর্বিহীন প্রোটিন এবং ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত উপাদান, তাজা খাবার। হাঁটাচলা, সাঁতার, শরীরচর্চা। পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আরও বেশি বছর বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাড়িয়ে তোলে।

(ঢাকাটাইমস/৯ জুন/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে বৃদ্ধ নিহত, আহত ৫
৩৩ জেলার ওপর দিয়ে বইছে তাপপ্রবাহ, আরও গরম বাড়ার ইঙ্গিত
বিক্ষোভকারীদের লস অ্যাঞ্জেলেসের শহর ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ
কক্সবাজারে সমুদ্রে নেমে বাবা-ছেলের মৃত্যু 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা