মেজর সিনহা হত্যা মামলা

প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:০৫
অ- অ+

মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান (অব.) হত্যা মামলার শুনানিতে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণার পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ফাঁসি কার্যকরের দাবি করেছেন এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।

অন্যথায় কঠোরতম কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা।

শনিবার বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক লে. কমান্ডার মেহেদি এ দাবি জানান।

বর্তমানে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি হাইকোর্টের বিচারপতি মুস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ থেকে চলমান রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক লে. কমান্ডার মেহেদি বলেন, বিপ্লব পরবর্তী ৮ মাস হয়ে গেলেও ফাঁসি কার্যকরের কোনো পদক্ষেপ নেই। এ থেকে বোঝা যায়, বিচারিক কার্যক্রমের ওপর এখনো পলাতক ফ্যাসিবাদীদের প্রভাব রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জুডিশিয়ারি, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, রায় কার্যকরের ক্ষেত্রে কোনো হুমকি, প্রলোভন বা রাজনৈতিক চাপ যেন আপনাদের প্রভাবিত করতে না পারে।

পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, রায় ঘোষণার পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তা কার্যকর করার। অন্যথায় এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন তাদের সাবেক সহকর্মী হত্যার রায় কার্যকর করার দাবিতে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

তিনি আরও বলেন, ওসি প্রদীপ কুমার দাশের মতো নৃশংস, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারলেই বিচার বিভাগ ও সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আরও দৃঢ় হবে।

এসময় মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া, পারভেজ ও তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডসহ জুলাই-আগস্টে গণহত্যার বিচারিক কার্যক্রম দ্রুততার ভিত্তিতে সম্পন্ন করার দাবিও জানান সাবেক সেনা কর্মকর্তারা।

তারা বলেন, আমরা এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন সদস্যরা এসকল হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রমের প্রতি তীক্ষ্ণ নজর রাখছি এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে যেকোনো চাপ উপেক্ষা করে বিচারিক কার্যক্রম দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সদস্যসচিব লে. সাইফুল্লাহ খাঁন সাইফ (অব.), উপসংগঠক সৈনিক নাইমুল হাসান, লে. কর্নেল মো. শাখাওয়াত, সাবেক নৌবাহিনী কর্মকর্তা সাইদ আলী ও সাবেক মেজর রাজিবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় করা মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত রায় দেন। রায়ে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সাতজনকে খালাস দেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

যাবজ্জীবন প্রাপ্তরা হলেন– বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা এবং পুলিশের সাক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শামলাপুরের তিন বাসিন্দা নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের রায় অনুমোদনের জন্য (ডেথ রেফারেন্স) মামলার নথিপত্র হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি দণ্ডিত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন। সেই আপিলের প্রেক্ষিতে গত বুধবার মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে হাইকোর্টে।

(ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/এলএম/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অন্যের বাগানের আম চুরি করল ইউনাইটেড গ্রুপের মালিকরা, থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক শনিবার
বিএনপি শুধু নির্বাচন নিয়ে কথা বললে বাংলাদেশ আশাহত হয়: সারজিস আলম
দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান আজ অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে: আমিনুল হক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা