জনগণের প্রকৃত মালিকানা ফেরত দিতে হবে: ডা. জাহিদ
দেশের মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, জনগণের প্রকৃত মালিকানা ফেরত দিতে হবে। গণতন্ত্রকে তার সঠিক জায়গায় রাখতে হবে। অর্থাৎ, মানুষ চিন্তা করবে তার ভোট কাকে দিবে। দেশ শাসন কে করবে, সেটা জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে। সংস্কার অবশ্যই হবে। সংস্কার করতে হলে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হচ্ছে সংবিধান। সবকিছু আপনি- আমি করে ফেললে হবে না। মানুষ কী চায়, সেটা আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। জনগণের মতামতের সুযোগ হচ্ছে ভোট।
রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ন্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাহিদ বলেন, অনেকে বলেন- বিএনপি তাড়াতাড়ি ভোট চায়। বিএনপি তো সবসময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে ছিল এবং আছে। বিএনপি তো কখনোই স্বৈরাচারের দোসর নয়। বিএনপি সাধারণ মানুষের মনের কথা বুঝে। সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহে বসে আছে- কখন তারা নিজের অধিকার প্রয়োগ করবে। সেজন্য বিএনপি বলছে, যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন যত দ্রুত দেওয়া হবে, তত দ্রুত বিশৃঙ্খলা দূর হবে। দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আজকের বাস্তবতায় সেটি (নির্বাচন) হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রয়োজনীয়তা।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি বিরাজমান, দেশের ভেতর এবং বাহির থেকে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে দেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে হবে। যারা আমাদের ভাইদের গুম-খুন করেছে, এ দেশের প্রচলিত আইনে প্রত্যেকের বিচার করতে হবে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ২০১৭-তে কর্মসূচি দিয়েছিলেন, ভিশন- ২০৩০। এরপরে আমাদের নেতা তারেক রহমান ২০২২ এর ডিসেম্বরে রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। আর ২০২৩ এর জুলাই মাসে সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ২৭ দফাকে ৩১ দফা করে সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। বিএনপি শুধু নিজের কথা বলে তা নয়-বিএনপি রাষ্ট্রের কথা বলে, আগামী দিনের কথা বলে।
তিনি বলেন, এই দেশে আজকে যে নারী শিক্ষা, তার আলোকবর্তিকা বেগম রোকেয়ার পরে যদি কারো কথা বলতে হয়, তিনি হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। এর কারণ হলো- নারী শিক্ষার জন্য প্রথম বই দিয়েছেন বেগম জিয়া। বিনা পয়সায় স্কুল করে দিয়ে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন, নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও খালেদা জিয়া করেছেন। অর্থাৎ এ দেশের যত মঙ্গল এবং যত ভালো কিছু আছে, তার পেছনে জড়িয়ে রয়েছেন শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও বিএনপি।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, পদত্যাগের তিন দিন আগেও শেখ হাসিনা বলেছিলেন- শেখের বেটি পালায় না। কিন্তু তিনি পালিয়ে গেছেন। নিজের দল, নিজের নেতাকর্মী কারও প্রতি তার বিন্দুমাত্র ভালোবাসা নেই। অপর দিকে বেগম খালেদা জিয়া এই বাংলাদেশে আছেন। উনাকে (খালেদা জিয়া) ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় ছয় বছর জেলে রাখা হয়েছে। উনি অনেক কম্প্রোমাইজ করেছেন। কিন্তু, তিনি তো দেশ ছেড়ে যাননি।
তিনি বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আপনারা (ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার) পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছেন, শত শত নেতাকর্মীকে গুম করেছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী গত ১৬ বছরে শহীদ হয়েছে, আবার জুলাই-আগস্টেও শহীদ হয়েছে। ১ লাখ ৬০ হাজার মামলায় ৭০ লাখ গণতন্ত্রকামী মানুষকে আপনারা (শেখ হাসিনা) দমিয়ে রাখতে পারেননি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ ঐক্যবদ্ধ।
নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ন্যাব) সভাপতি জাহানারা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/জেবি/এমআর)
মন্তব্য করুন