চকবাজারের বসছে না ইফতার বাজার

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে এবার বসছে না ঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজার। প্রতিবছর রোজা শুরুর আগে থেকে চকবাজারের সড়ক বন্ধ করে চলে ইফতারের দোকান বসানোর নানা কর্মযজ্ঞ। কিন্তু এবার সে চিত্র ভিন্ন। বসানো হয়নি কোনো দোকান, নেই বিক্রেতাদের ব্যস্ততা।
রোজা শুরুর আগে থেকে নানা কর্মব্যস্ততা থাকে পুরান ঢাকার চকবাজারের ইফতার সামগ্রী বিক্রেতাদের মাঝে। রোজা শুরুর আগের দিন থেকেই বসে দোকান। মাসব্যাপী চলা এই ইফতার বাজারে মেলে নানান মুখরোচক খাবার।
বিক্রি হয় ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামক একটি ভিন্ন ইফতার সামগ্রী। যা কত কয়েক বছর ধরে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। অনেকে শুধু এই খাবারের জন্য ভিড় করেন চকবাজারের ইফতার বাজারে। এছাড়া বটি কাবাব, সুতা কাবাব, রেশমি কাবাব, জালি কাবাব থেকে শুরু করে ১০ থেকে ১২ ধরনের কাবাব। আস্ত খাসি ভুনা, আস্ত কোয়েল ভুনার পাশাপাশি এখানে পাওয়া যায় নানান ধরনের টিকিয়া। পাওয়া যায় শাহী জিলাপি, মাঠা সহ অন্তত বিশ ধরণের মিষ্টি দ্রব্য। এসময় শতাধিক খাবারের পশরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।
ইফতারে এসব খাবার রাখতে পছন্দ করেন অনেকেই। ফলে ঢাকার প্রায় সব এলাকা থেকে দুপুরের পড় থেকে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যেত চকবাজারে। লোকে লোকারণ্য থাকত ইফতার পর্যন্ত।
কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, ফার্মেসি হাসপাতাল বাদে অন্য সকল দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত ২৬ মার্চ থেকে ঘোষিত সাধারণ ছুটি তিন দফা বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। এ সময়ে বিনা প্রয়োজনে কাউকে বাইরে না আসতে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চকবাজারের ইফতার বাজারের ক্রেতাদের ঢলের কারণে চলাচল করাই কষ্টকর হয়ে পড়ত। ফলে সেখানে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই জনসমাগমের নিষেধাজ্ঞার কারণেই মূলত ঐতিহ্যবাহী এই ইফতার বাজারের এবার আর দেখা যাচ্ছে না।
ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের প্রত্যাশা, পবিত্র রমজানে ইবাদতের মধ্য দিয়ে তারা করোনাভাইরাস থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন। আল্লাহ ক্ষমা করলে আগামী বছর সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/কারই/ইএস)

মন্তব্য করুন