চামড়ার ক্রেতা নেই, কেউ দিচ্ছেন মাদ্রাসায়

গত কয়েক বছর ধরে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম পাচ্ছে না বিক্রেতারা। অনেকটা পানির দরে বিক্রি হয়েছে চামড়া। তবে এ বছর চামড়ার বিক্রি তো দূরের কথা চামড়ার ক্রেতার দেখাও মেলেনি বেশির ভাগ জায়গায়। কোথাও কোথাও ক্রেতা আসলেও ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে গরুর চামড়া। খাসির চামড়ার কেউ কিনেনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে খোঁজ নিয়ে এমন খবর পাওয়া গেছে।
আশানুরূপ দাম না পেয়ে মাদ্রাসায় দান করে দিয়েছেন অনেকে। আবার কোথাও কোথাও মাটিতে চামড়া পুতে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এদিকে চামড়ার দাম না পেয়ে হতাশ কোরবানি দাতারা। তাদের ভাষ্য, এটা গরিবের হক। কিছু মুনাফালোভী মানুষ সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। পরে কৌশলে কম দামে চামড়া কিনে নিবে। তারা বলেন, চামড়ার জুতা, বেল্ট, ব্যাগ কিনতে অনেক টাকা লাগে। তাহলে চামড়ার এত কম দাম হবে কেন।
শনিবার দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবছর চামড়ার মৌসুমী ক্রেতা আসেনি। কোথাও ক্রেতা গেলেও চামড়ার দাম বলেছে খুব কম। ফলে বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। তবে বেশির ভাগ মানুষ মাদ্রাসায় চামড়া দান করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজম মন্তব্য করেন চামড়া ব্যবসায়ীরা মাদ্রাসায় থেকে পড়ে কম দামে কিনে নিবে। সেজন্য তারা বাড়ি বাড়ি যায়নি।
বিকাল ৪টার খড়মপুর গ্রামের কাহী ফাহাদ খাদেমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গরুর চামড়া মাটিতে রাখা আছে। তিনি বলেন, চামড়া কিনতে কেউ আসেনি। ক্রেতা না পেলে হয়তো মাটিতে পুতে ফেলতে হবে। নতুবা পাশের গ্রামের মাদ্রাসার এতিমখানায় দিয়ে আসবেন।আখাউড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, সবকিছুর দাম বাড়তেছে তাহলে চামড়ার দাম বাড়বে না কেন। অথচ চামড়াজাত পণ্যের দাম অনেক বেশি। আমার মনে হয়, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে রাখা হচ্ছে। এই সিন্ডিকেট ভাঙা দরকার। কারণ চামড়া এক সময় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য ছিল। চামড়ার দাম বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসবে। চামড়ার টাকা গরিব দুস্থদেরকে দেওয়া হতো। চামড়া দাম কমে যাওয়ায় গরিবের হক নষ্ট হচ্ছে।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি এম রাশেদুল ইসলাম বলেন, সরকার এবছর চামড়ার ভালো দাম দিয়েছে। কেউ যদি ইচ্ছা করে চামড়ার দাম কারসাজি করে তথ্য প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১২ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা নির্ধারণ করে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস।(ঢাকা টাইমস/০৭জুন/এসএ)

মন্তব্য করুন