যেভাবে আকাশে ভাসে বিশাল বিমান, জানুন রহস্য

হাজার হাজার কেজি ওজনের বিশাল বিমান আকাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উড়ে বেড়ায়। পড়ে যায় না। বিমান বাতাসের চেয়ে ভারী হওয়া সত্ত্বেও বাতাসে ভাসে, কারণ বিমানের ডানা এমনভাবে তৈরি করা হয় যে ডানার উপরের অংশের বাতাস নিচের অংশের চেয়ে দ্রুত চলে। এর ফলে, ডানার উপরে বাতাসের চাপ কম এবং নিচে বেশি থাকে, যা বিমানকে উপরে উঠতে সাহায্য করে। একে লিফট বা উত্তোলন বলা হয়। সহজ কথায়, বার্নোলির নীতি এবং ডানার বিশেষ গঠনের কারণে বিমান আকাশে ভাসে। বিমান ওড়ার জন্য চারটি মূল বিষয় কাজ করে:
উত্তোলন (Lift)
বিমানের ডানা এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে ডানার উপরের বাতাস নিচের বাতাস থেকে দ্রুত চলাচল করে। এর ফলে ডানার উপরে বাতাসের চাপ কমে যায় এবং নিচে বাতাসের চাপ বেশি থাকে। এই চাপের পার্থক্যের কারণে লিফট বা উপরের দিকে বল তৈরি হয়, যা বিমানকে উপরে উঠতে সাহায্য করে।
মাধ্যাকর্ষণ (Gravity)
মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর দিকে বিমানকে আকর্ষণ করে। লিফট এই মাধ্যাকর্ষণ বলের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং বিমানকে উপরে উঠতে সাহায্য করে।
থ্রাস্ট (Thrust)
থ্রাস্ট বিমানের ইঞ্জিন থেকে উৎপন্ন একটি বল যা বিমানকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। এটি বিমানের গতি বাড়াতে সাহায্য করে।
টেনে আনা (Drag)
এটি বাতাসের কারণে বিমানের গতির বিপরীত দিকে একটি বল।
এই চারটি বল একে অপরের সাথে ভারসাম্য বজায় রেখে বিমানকে উড়তে সাহায্য করে।
বিমান ওড়ার মূল নীতিটি বার্নোলির নীতি এবং ডানার বিশেষ গঠনের উপর নির্ভরশীল। বার্নোলির নীতি অনুসারে, যখন কোনো প্রবাহীর (যেমন বাতাস) বেগ বৃদ্ধি পায়, তখন তার চাপ কমে যায়। বিমানের ডানা এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, ডানার উপরের বাতাস নিচের বাতাস থেকে বেশি পথ অতিক্রম করে, ফলে উপরের বাতাস দ্রুত চলে এবং চাপ কমে যায়। এই চাপের পার্থক্যই বিমানকে উপরে উঠতে সাহায্য করে।
তবে বিমানকে শুধু ভাসিয়ে রাখলেই হয় না, তাকে এগিয়ে চলতে হয়। আর সে কাজটা করে জেট ইঞ্জিন। ইঞ্জিন যত জোরে ঠেলবে, বিমান তত দ্রুত ছুটবে, আর তত বেশি লিফট তৈরি হবে। এছাড়া বিমান আকাশে ভেসে থাকার যেসব বিষয় কাজ করে সেগুলো হলো-
ওজন বনাম উত্তোলন
বিমানের ওজন তাকে নিচে নামিয়ে আনতে চায়। কিন্তু যখন লিফট ফোর্স এই ওজনের সমান বা তার বেশি হয়, তখনই বিমান ভেসে থাকতে পারে। এই ভারসাম্য ঠিকঠাক থাকলে, বিমান দীর্ঘ সময় আকাশে উড়তে পারে অনায়াসে।
নিয়ন্ত্রণ পৃষ্ঠ
বিমানের ভেতর আছে নানা রকম নিয়ন্ত্রণ পৃষ্ঠ—আইলারন, এলিভেটর, রাডার ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমে পাইলট বিমানকে বাঁ দিকে ঘোরানো, ওপরে তোলা, নিচে নামানো—সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
টার্বুলেন্সে কাঁপলেও পড়ে না
বাতাসের ধাক্কা বা টার্বুলেন্স থাকলে অনেক যাত্রী ভয় পেয়ে যান। কিন্তু আধুনিক বিমানের নকশা এমনভাবে তৈরি যে, হালকা ধাক্কা বা কম্পন হলেও তা উড়ানকে প্রভাবিত করে না।
(ঢাকাটাইমস/২৭ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন