পাকিস্তানে
গোপন কসাইখানায় অভিযান: ৫০টি গাধা ও ১ হাজার কেজি মাংস জব্দ

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে একটি গোপন কসাইখানায় অভিযান চালিয়ে ৫০টি জীবিত গাধা ও ১ হাজার কেজি গাধার মাংস জব্দ করেছে দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (২৭ জুলাই) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসলামাবাদ ফুড অথরিটি (আইএফএ) এই অভিযান চালায় তারনোল এলাকায় অবস্থিত একটি অবৈধ কসাইখানায়।
আইএফএ’র মুখপাত্র জানান, অভিযানে প্রচুর প্যাকেটজাত মাংস ও জীবিত গাধা পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এসব মাংস বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করা হচ্ছিল। জব্দ করা মাংস ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আইএফএ’র উপপরিচালক ডা. তাহিরা সিদ্দিক নিশ্চিত করেছেন, উদ্ধার হওয়া মাংসের পরিমাণ ১ হাজার কেজি বা ১ মেট্রিক টন। অভিযানের সময় ঘটনাস্থল থেকে এক বিদেশিকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আইএফএ পরিচালক। পাশাপাশি, এই মাংস কোথায় কোথায় সরবরাহ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
চীনের চাহিদায় গাধা জবাই বাড়ছে:
পাকিস্তান পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জুনে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, দেশটিতে গত এক বছরে গাধার সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৯ হাজার। বর্তমানে গাধার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ লাখ ৪৭ হাজার, যেখানে আগের বছর এটি ছিল ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাধার সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ চীনে এর মাংস ও চামড়ার বিপুল চাহিদা। চীনে গাধার চামড়া দিয়ে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ ই-জিয়াও তৈরি হয়, যা বিভিন্ন চিকিৎসাজনিত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাণী কল্যাণ সংস্থা ‘দ্য ডাংকি স্যাংচুয়ারি’ জানিয়েছে, ই-জিয়াও উৎপাদনের জন্য প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫৯ লাখ গাধার চামড়া প্রয়োজন হয়, যা গাধা জনগোষ্ঠীর ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলি জানিয়েছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শানডং প্রদেশে প্রায় ৩ হাজার বছর ধরে ই-জিয়াও উৎপাদনের ঐতিহ্য রয়েছে এবং বর্তমানে জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত এই ওষুধ শিল্পের প্রায় ৯০ শতাংশই সেখানেই উৎপন্ন হয়।
প্রাণী অধিকার সংগঠন ও পশু চিকিৎসকরা বলছেন, বৈশ্বিক চাহিদা মেটাতে গাধা জবাইয়ের হার বেড়ে যাওয়ায় প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে অবৈধ কসাইখানার মাধ্যমে পরিচালিত এমন কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন ও নৈতিকতার পরিপন্থী বলেও অনেকে মত দিয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/এসএস)

মন্তব্য করুন