গণসার্বভৌমত্ব কায়েম না হলে গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে: ফরহাদ মজহার

বিশিষ্ট কবি ও লেখক ফরহাদ মজহার বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায় ছিল গণসার্বভৌমত্ব কায়েম করা, যেখানে ক্ষমতার মালিক হবে জনগণ। যদি রাষ্ট্রের কাছে ক্ষমতা রেখে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রাখা হয় তাহলে রাষ্ট্র আমলাতান্ত্রিকতা দিয়ে দেশ চালাবে। বিভিন্ন বাহিনীসহ প্রশাসকরা শাসক হবে, ঠিক যেমন ইংরেজ শাসকরা আমাদের শাসন করেছে। তাই এই রাষ্ট্রব্যবস্থা চললে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়ে যাবে।’
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিল্পকলা একাডেমিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা ও ভাবগানের আসরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান করেছে জনগণ, এর পেছনে কোনো মাস্টারমাইন্ড কিংবা তথাকথিত বিশেষ কোনো গ্রুপের নেতৃত্ব ছিল না। পৃথিবীতে গণঅভ্যুত্থান এভাবেই ঘটে।’
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের দুটি চাওয়া ছিল- ব্যক্তির অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা আর দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তা বাস্তবায়ন করতে হলে রাষ্ট্রকে সংস্কার নয় বরং নতুনভাবে গঠন করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘তরুণরা তাদের রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। তারা লড়াই করছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা সফল হতে পারছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা কৌশলগত ভুল করছে। ফলে তাদের পেছনে আমাদের থাকতে হবে। তাদের সমর্থন দিতে হবে।’
জুলাই ঘোষণাপত্র জনগণের অধিকার বলে মন্তব্য করে এই দার্শনিক বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর তাৎক্ষণিকভাবে জুলাই ঘোষণাপত্র দেয়ার কথা। কিন্তু ৫ আগস্টের পর জনগণ যে ক্ষমতা পেয়েছিল তা আবার ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে, যেহেতু জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় জুলাই ঘোষণাপত্র হয়ে গেল জুলাই সনদ। অথচ জুলাই সনদ আমরা কেউ চাইনি।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভাব বৈঠকির প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ রুমেল, জেলা কালচারাল অফিসার সুদীপ্তা চক্রবর্তী, দক্ষিণাঞ্চলীয় যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান প্রমুখ।
পরে একটি মনোজ্ঞ ভাবগানের আসর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এবং নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন