ফুল দেয়া নিয়ে ইবিতে ছাত্রলীগ-কর্মচারী মারামারি

কুষ্টিয়াপ্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:১৮| আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:২৩
অ- অ+

বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে গিয়ে ইসলামী বিশ্ব বিদ্যালয়ে (ইবি) কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সাংবাদিকরাও হেনস্থার শিকার হন।

বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুক্ত বাংলা’র পাদদেশে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রশাসন ভবনের সামনে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন ওড়ানোর মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয় দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘মুক্ত বাংলা’য় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সালাম। এরপর একে একে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, ইবি শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্র ঘোষিত বঙ্গবন্ধুপরিষদ শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। একপর্যায়ে ফুল দেয়ার জন্য বেদিতে ওঠে হান্নান গ্রুপ সমর্থিত ইবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এসময় পাশ থেকে ইবি অফিসার্স মোর্শেদ গ্রুপ সমর্থিত ছাত্রলীগের কর্মীরা হান্নান গ্রুপের বিরুদ্ধে বেদিতে জুতা পায়ে দিয়ে ওঠার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করতে থাকেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কর্মকর্তা সমিতির উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে মের্শেদ গ্রুপ সমর্থিত কর্মকর্তা-ছাত্রলীগ একজোট হয়ে প্রতিপক্ষ হান্নান গ্রুপের সঙ্গে হাতাহাতি, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়ান। ফুলের ডালি নিয়ে টানা-হেঁচড়ার এক পর্যায়ে তা ভেঙে যায়। পরে কর্মচারী সমিতি ফুল নিয়ে বেদিতে উঠলে তাদের উপর দ্বিতীয় দফায় হামলা করেন মোর্শেদ গ্রুপের সমর্থকরা। এসময় গোটা ক্যাম্পাসে ত্রি-পক্ষীয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় হান্নান গ্রুপ সমর্থিত অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনেরসদস্যদের ধাওয়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট থেকে বের করে দেয়। তবে এঘটনায় গুরুতর আহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে ঘটনার সংবাদ ও চিত্র সংগ্রহকালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হামলা ও হেনস্তার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সাংবাদিক। অন্যান্য সাংবাদিকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ ইবি প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক সমিতি নেতৃবৃন্দের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমান সবাইকে শান্ত হওয়ার আহবান জানালেও তাতে আমল দেয়নি কেউ। পরিস্থিতি সামাল দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ। প্রায় দুই ঘণ্টা পর পরিবেশ শান্ত হলে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে বেদিতে আসেন।

এর আগেও গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করেও এই সব পক্ষ ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে উত্তেজনা এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিলো।

এ বিষয়ে মোর্শেদ গ্রুপের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর মো. মোর্শেদুর রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবসপালন ও স্মরণ করতে তার যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য লঙ্ঘন করে একদল জামাত-বিএনপি সমর্থিত প্রতিক্রিয়াশীল লোক জুতা পায়ে বেদিতে উঠে অবমাননা করবে, স্পর্ধা দেখাবে এটা তো হতে পারে না। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি।

অপরদিকে হান্নান গ্রুপের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল হান্নান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সেখানে সিসি ক্যামেরাসহ অনেক সাংবাদিক ভাইদের ক্যামেরা ছিল। সেগুলি দেখলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে আমাদের পায়ে জুতা ছিলো কি না। এটা ওরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। আমরাএই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ বিচার দাবি করছি।

ইবি থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকালে বেদিতে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করেকর্মকর্তা কর্মচারী ও ছাত্রদের মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিলো। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ক্যাম্পাস এখন শান্ত। সাংবাদিক লাঞ্ছনার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রক্টর অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, আজকের মহান বিজয় দিবসে যারা ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল রুল ব্রেক করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৬ডিসেম্বর/কারই/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এ বিচার অতীতের প্রতিশোধ নয়, ভবিষ্যতের জন্য প্রতিজ্ঞা: চিফ প্রসিকিউটর
সিরাজগঞ্জে শীর্ষ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
পদ্মা ব্যাংকের ১২৭তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত
কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ঢেউটিন বিতরণ করল শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা