বৃদ্ধ মাকে রাস্তায় ফেলে গেল সন্তানরা, এগিয়ে এলো এলাকাবাসী

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১১:৩৪| আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২১, ১২:২২
অ- অ+

ঢাকার ধামরাইয়ে এক শতবর্ষী বৃদ্ধাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার সন্তানদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী বৃদ্ধার নাম মরিয়ম বেগম। তিনি ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়নের রশ্মিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি বাজারের পাশে তাকে ফেলে চলে যান সন্তানেরা। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

ওই বৃদ্ধার আট ছেলে ও মেয়েদের সবাই প্রতিষ্ঠিত। মায়ের নামে লেখা ১৫ বিঘা জমি সন্তানদের লিখে না দেওয়ায় এই পরিণতি হয়েছে বলে দাবি গ্রামবাসীর।

প্রতিবেশীরা বলছে, বৃদ্ধ মরিয়মের বাবা ছিলেন ওই গ্রামের প্রয়াত আসুরুদ্দিন সরকার নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি। তাঁতশিল্পসহ কয়েকশ’ বিঘা জমির মালিক ছিলেন আসুরুদ্দিন। তাই একমাত্র মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তাকে ১৫ বিঘা জমি লিখে দিয়ে বিলাসবহুল একটি বাড়ি নির্মাণ করে বিয়ে দেন। এরপর জামাতা আব্দুস সালামকে ঘরজামাই হিসেবে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেন।

পরবর্তীতে মরিয়ম বেগম ছয় ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জননী হন। প্রত্যেক সন্তানকেই তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। বড় ছেলে আক্তারুজ্জামান একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা। মেঝ ছেলে ডা. হুমায়ুন কবীর, তিনি একটি সরকারি আবাসিক হাসপাতালে কর্মরত। বাকি দুই ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সাকী ও আব্দুল্লাহেল বাকী ব্যবসায়ী। সবার ছোট ছেলে আলমগীর হোসেন বিদেশে ভালো বেতনে চাকরি করেন।

তাদের কারও সংসারে কোনো অভাব না থাকলেও বৃদ্ধ মাকে ভরণপোষণ দিতে সবার অনীহা। তাই ক্ষুধার জ্বালায় ছটফট করা বৃদ্ধ মরিয়ম বেগম ক্ষুধার যন্ত্রণা মেটাতে ঘুরে হাত পাতেন মানুষের কাছে। না খেয়ে অসুস্থতার কারণে তার বাকশক্তিও লোপ পেয়েছে।

এই বিষয়ে সন্তানদের বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই শতবর্ষী বৃদ্ধ মাকে চিকিৎসার কথা বলে গাড়িতে তুলে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশে রাস্তার ওপর ফেলে রেখে যায়। তার গোঙানির শব্দ পেয়ে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় আব্দুল লতিফের বাড়িতে নিয়ে সেবা-শুশ্রূষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।

এ ব্যাপারে বৃদ্ধার ছোট ছেলে আলমগীর হোসেন বলেন, আমার মায়ের অনেক বয়স হয়েছে। বয়সের কারণে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। তাই আমাদের নিয়ে এমন উল্টা-পাল্টা বলছেন। আসলে আমরাই তাকে যথেষ্ট ভরণপোষণ দিচ্ছি ও সেবাযত্ন করছি।

তবে আব্দুল লতিফ নামে এক গ্রামবাসী বলেন, বৃদ্ধার ছেলেরা যদি তার ভরণপোষণ দেয় ও সেবাযত্ন করে থাকে তাহলে তার এ করুণ দশা কেন? শুধু তাই নয়, গ্রামবাসী মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে স্থানীয় বঙ্গবাজারের পাশের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিচ্ছে কেন?

(ঢাকাটাইমস/২০অক্টোবর/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ গোটা অঞ্চলে ভয়াবহ নরক বয়ে আনবে: বিবিসিকে ইরানের উপমন্ত্রী
সময় মাত্র দুই সপ্তাহ!
ইরানের মিসাইলগুলো বিশ্বের সম্মানিতদের আনন্দিত করেছে: খামেনি
ভূয়া তথ্য প্রচারে ইরানের টার্গেট লিস্টে ইসরায়েলের চ্যানেল-১৪, যেকোন সময় হামলা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা