মনুর পানি বাড়ায় বাঁধ ভাঙার শঙ্কা, ভয়াবহ বন্যার মুখে মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারে মনু নদীর বাঁধ রক্ষায় মরণপণ লড়াই করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন । রবিবার রাতে খরস্রোতা এই নদীর পানি হঠাৎ একদম বিপৎসীমায় চলে যায়। এরপরই মনু নদীর দুই পাড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরোটাই চরম ঝুঁকির মধ্য চলে যায়। যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে অথবা নদীর পানি ওভার ফ্লো করে পুরো জেলা তলিয়ে যেতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বাঁধের পরিস্থিতি জানাতে গিয়ে 'ঢাকা টাইমস'কে বলেন, মনু নদীর বাঁধের পুরোটাই এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। এছাড়া প্রতি ঘণ্টায় মনুর পানি বেড়েই চলেছে। আমার লোকজন নিয়ে বাঁধ রক্ষায় লড়াই করছি।
কুলাউড়া জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। হাকালুকি হাওর পাড়ে অধিকাংশ নলকূপ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এই সংকট দেখা দেয়। ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, ঢাকা টাইমসকে জানান, ইউনিয়নের ভুকশিমইল, বাদে ভুকশিমইল, কাড়েরা, কোরবানপুর, সাদিপুর গৌড়করণ এসব গ্রামের অনেক নলকূপ পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এখানে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানা গেছে, জেলার ৭ উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে রবিবার রাত পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি মানুষ উঠেছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ঢাকা টাইমসকে জানান, মনু নদীর বাধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড পুলিশ আনসারসহ স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় বাধ রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, জেলার ৭ উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২১০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজার জেলার ৭ টি উপজেলার ৩ লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কুলাউড়া-বড়লেখা এবং জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কে পানি উঠায় সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া হাকালুকি হাওরের পানি বেড়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় বিদ্যুতের দুটি ফিডার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/২০জুন/এআর)

মন্তব্য করুন