আন্দোলন চলবে কি না সিদ্ধান্ত আজ

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল। শনিবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকটি হয়েছে। দুপুর ১টায় বৈঠক শেষ হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, আলোচনা সন্তোষজনক হয়েছে। তবে কর্মবিরতির বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন তারা।
অন্যদিকে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে ভাষণে সবার জন্য পেনশন স্কিমের যে ডেটটা বলেছেন, শিক্ষকদের ব্যাপারে যে তথ্যটা গেছে এটা মিসটেক। এটাই সত্য সবাইকে পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার তারিখ হচ্ছে ২০২৫ সালের ১ জুলাই। এটা তাদেরকে আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি।’
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা বলেছেন, আলোচনা শুরু হওয়ায় তারা খুশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এতদিন তো বৈঠক শুরু হয়নি। এখন বৈঠক শুরু হওয়ায় আলোচনার দ্বার খুলল। সব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা হয়েছে। এখানে অনেক বিষয় এসেছে। আগামীকালের (রবিবার) মধ্যে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় সভা ডেকে সরকারের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে তা সাধারণ শিক্ষকদের কাছে উপস্থাপন করা হবে।’
জিনাত হুদা বলেন, ‘আগামীকালও (রবিবার) কর্মসূচি বহাল থাকবে।’ তবে এটা পরবর্তী সময়েও চলমান থাকবে কি না সেটি সাধারণ শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে প্রজ্ঞাপন বাতিল করাসহ তিন দফা দাবিতে ১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এ কারণে ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রশাসনিক ভবনেও কোনো কাজ হচ্ছে না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবা নিতে যাওয়া মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি ছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সবাই যুক্ত হবেন ২০২৫ সালের ১ জুলাই। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের বিষয়ে তথ্য ছিল, সেটা সঠিক নয়। তাদের তিনটা দাবির মধ্যে এটাও একটা দাবি। সবার মতো তারাও ২০২৫ সালের ১ জুলাইয়ে যোগ দেবেন, এটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১০ শিক্ষক নেতা এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে, একটা বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি মিটেছে। অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে বলে জানান তিনি।
এ রকম পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতির বিষষে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার তারা আলোচনা করেছেন। আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে। আলোচনা শুরু হওয়ায় তারা খুশি। আগামীকাল (রবিবার) অনলাইনে (জুমে) ফেডারেশনের সভা হবে। সেখানেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে আগামীকালের কর্মসূচি যথারীতি চলবে।’
শনিবারের বৈঠকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুর রহিমসহ ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যোগ দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাঁপা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/কেএম)

মন্তব্য করুন