সরকার পতনের দাবিতে অসহযোগের ডাক: জাতীয় দৈনিকগুলোর প্রধান সংবাদ
শিক্ষার্থীদের চলমান ৯ দফা দাবি এখন এক দফাতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতাসীন সরকার পদত্যাগ করুক—এটাই বর্তমানে তাদের একমাত্র চাওয়া। এই চাওয়া পূরণে আজ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, অভিভাবকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের চাওয়াও অভিন্ন। হত্যার দায় মাথায় নিয়ে ক্ষমতা ছাড়তে হবে এই সরকারকে। অন্যদিকে, সরকার চাইছে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসতে। দেশের প্রধান দৈনিকগুলোর প্রধান খবর হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে এসবই।
কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘অসহযোগের ডাক, সমঝোতা চায় সরকার’। এ খবরে বলা হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে এক দফা দাবিসহ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সেখানে রবিবার থেকে সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলন চলবে বলে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে, সরকারের পক্ষ থেকেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।’ একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আটক সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেন। পাশপাশি কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময়ের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের আশ্বাস দেন।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা।
সমকালের প্রধান শিরোনাম, ‘সরকার পদত্যাগের এক দফা’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আর ৯ দফা নয়, এবার সরকার পতনের এক দফা দাবিতে এসে ঠেকেছে ছাত্র আন্দোলন। এই এক দফা বাস্তবায়নে রবিবার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে। একসময় ওই এলাকা রূপ নেয় জনস্রোতে। ছাত্র-জনতার জমায়েতের ব্যাপ্তি একদিকে পুরান ঢাকার চানখাঁরপুল, অন্যদিকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। নানা স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তরফ থেকে শনিবার বিকাল তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সরকার পতনের এক দফা ঘোষণার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনার এলাকা ছাড়ে।
এরপর একটি অংশ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। আরেকটি অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে তারা ওই এলাকা ছাড়েন।
সমকাল ছাড়াও প্রায় প্রতিটি পত্রিকার প্রধান শিরোনামে শিক্ষার্থীদের এই এক দফা দাবি প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে, এক্ষেত্রে প্রথম পাতার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো তুলে ধরা হলো।
প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম, ‘চট্টগ্রাম, গাজীপুরে নিহত ২, কুমিল্লায় গুলিবিদ্ধ ৭’। এ খবরে বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকার পাশাপাশি অন্তত ৩৩টি জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ–সংঘাতে দুজন নিহত হয়েছেন।
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় সাতজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া সাত জেলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩০ জন। চট্টগ্রাম শহরে শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসায় হামলা হয়েছে। এ সময় তিনি বাসায় ছিলেন না।
এর আগে চট্টগ্রাম–১০ আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এছাড়া রাতে চট্টগ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনসহ চার নেতার বাসায় হামলা চালানো হয়েছে। ছাত্রলীগ–যুবলীগ এ হামলায় জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা।
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবার বিভিন্ন সময় দেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মহাসড়কে যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-লক্ষ্মীপুর মহাসড়ক, গাজীপুরের মাওনায় মহাসড়ক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। এতে মহাসড়কগুলোয় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর, ‘খুনি সরকারের সাথে পরিকল্পনা নেই আলোচনার: সমন্বয়ক নাহিদ’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শিক্ষার্থী, নিরীহ মানুষ হত্যাকারী সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসার আর কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনত্যম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপের প্রস্তাবের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্রজনতা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিল। সরকার দমন-পীড়ন করে সেটিকে সঙ্ঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধ করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এবার এরকম পরিস্থিতি হলে কারো জন্যই পরিণতি ভালো হবে না। সংলাপের বিষয়ে কোটা আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, খুনি সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসারও সুযোগ আর নেই।
যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর, ‘সর্বাত্মক অসহযোগের ১৫ নির্দেশনা: ট্যাক্স দেবেন না, অফিস কলকারখানা বন্ধ’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, আজ রবিবার থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এজন্য ১৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশের কোনো নাগরিক আজ থেকে কেউ কোনো ধরনের ট্যাক্স বা খাজনা দেবেন না। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোনো ধরনের বিল পরিশোধ করা হবে না। সব ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও কলকারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন নিতে যাবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোনো ধরনের রেমিট্যান্স দেশে পাঠাবেন না। সব ধরনের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন। রবিবারর ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে। বাকি সাপ্তাহিক কার্যদিবসগুলোতে ব্যাংক বন্ধ থাকবে।
তবে হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহণ সেবা যেমন, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহণ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহণ, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহণ সেবা চালু থাকবে।
আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর, ‘আজ ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নেবে আ.লীগ’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে বিরাজমান পরিস্থিতিতে নতুন করে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। রবিবার ঢাকার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এবং জেলা ও মহানগরে নেতা-কর্মীদের জমায়েত করবে দলটি। দুই পক্ষ মাঠে নামলে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, ‘এ কর্মসূচিতে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে সেখানে সংঘাত-সংঘর্ষ হতেই পারে। তবে হবেই এমন কথা নয়। আমরা কোনো সংঘাতে যাব না। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব।’
এদিকে সোমবার থাকছে শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে নিহত এবং সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শোক মিছিল। শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দুই দিনের এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মানবজমিনের প্রথম পাতার খবর, ‘রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে থাকবে : সেনাপ্রধান’। প্রতিবেদনে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। সেনাসদর, হেলমেট অডিটোরিয়ামে নিয়মিত কার্যক্রমে অংশ নিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জনগণের আস্থার প্রতীক। জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনা’।
এছাড়াও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলমান বিভিন্ন গুজব সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি সততা, সত্যনিষ্ঠা ও ন্যায়পরায়ণতার সাথে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা প্রদান করেন। বাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে”।
শনিবার রাতে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান তার বক্তব্যে সকল সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর আলোকপাত করে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
পাশাপাশি তিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে জনগণের জান-মাল ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেন। এসময় সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাগণসহ সকল সেনানিবাস হতে ফরমেশন কমান্ডারগণসহ সকল পদবির সেনাকর্মকর্তাগণ ভিডিও টেলিকনফারেন্স (ভিটিসি) এর মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।
বণিক বার্তার প্রথম পাতার খবর, ‘বাংলাদেশ ইস্যুতে ব্লিংকেনকে ২২ মার্কিন আইনপ্রণেতার চিঠি’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ২২ আইনপ্রণেতা। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট ও বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারা রয়েছেন।
শুক্রবার লেখা ওই চিঠিতে তারা বলেছেন, ‘কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এতে বর্তমান সরকারের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়েছে।’
চিঠিতে তারা আরও লিখেছেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খর্ব করে, এমন পদক্ষেপ অব্যাহতভাবে নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এর মধ্যে আছে জানুয়ারিতে ভয়াবহ ত্রুটিপূর্ণ এক নির্বাচন। শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতেও ব্যর্থ হয়েছে। ছাত্র বিক্ষোভের জবাব দিতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞায় থাকা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে ব্যবহার করেছে।’
চিঠিতে বলা হয়, ‘বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে দাঙ্গা পুলিশ। এছাড়া সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কঠোর কারফিউ ও দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভ দমনের জন্য ইন্টারনেটও বন্ধ করা হয়েছে।’
দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর, ‘প্রধানমন্ত্রী মনে করলে পদত্যাগে রাজি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মনে করলে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
শনিবার রাতে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি আন্দোলনকারীদের পদত্যাগের দাবি নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রয়োজন হলে যদি এ রকম কোনো সিচুয়েশন আসে, প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন... আমরা সবসময় দেশের জন্য কাজ করি, আমরা সেটা (পদত্যাগ) করব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আন্দোলনের সময় ৩২ জন শিশু মারা যায়নি। ১৮ বছর হলে শিশু হয় না। তারা যুবক হয়ে যান। তবে কয়েকজন শিশু মারা গেছে। ‘ঢালাওভাবে যেভাবে বলা হচ্ছে তা সঠিক না। যারা মারা গেছেন তাদের শরীর থেকে যেসব গুলি উদ্ধার করা হয়েছে তার মধ্য সবগুলো কিন্তু পুলিশের গুলি না। তারপরও আমরা বিষয়গুলো তদন্ত করছি।’
শিক্ষার্থীদের এক দফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কেন এক দফা দাবি করেছে, তাদের তো এই দাবি ছিল না। এই থেকে বোঝা যায় তাদের পেছনে বিএনপি-জামায়াত জড়িত’।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষার্থীদের জামিনে মুক্ত করা হয়েছে। তবে যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আজ রবিবার ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় সকাল ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে তিনি জানান।
(ঢাকাটাইমস/০৪আগস্ট/এজে)