তারেক রহমান গণতন্ত্রকে ঢেলে সাজিয়ে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে তুলে ধরবেন: কামাল জামান মোল্লা

দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য এই মুহূর্তে দেশে জাতীয় নির্বাচন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য মনোনয়ন প্রার্থী কামাল জামান মোল্লা। তিনি বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের হাল ধরে গণতন্ত্রকে ঢেলে সাজিয়ে দেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নত দেশ হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন।

রবিবার বিকালে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বনানী ইউনিট বিএনপি।

কামাল জামান মোল্লা বলেন, শেখ মুজিব যেদিন বাংলাদেশে বাকশাল সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছিল, সেদিন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এই দেশে আবারও গণতন্ত্র পুনর্জীবিত হয়েছিল। জিয়াউর রহমান যেদিন শহীদ হন সেদিন তার কোন টাকা ছিল না, কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছিল না। সেদিন তার বাসায় তার ব্যবহারের মাত্র দুই সেট কাপড় পাওয়া গিয়েছিল। তারই সুযোগ্য দুই সন্তান আরাফাত রহমান কোকো ও তারেক রহমান। তারা তাদের বাবার পোশাক কেটে ড্রেস বানিয়ে স্কুলে যেতেন। এটাই ছিল জিয়াউর রহমানের আদর্শ।

তিনি বলেন, আমরা সবাই সেই সব প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। তার আদর্শকে ধারণ করে আমরা দীর্ঘ ১৮ বছর রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে স্বৈরশাসককে দেশ থেকে বিদায় দিয়েছি। এই স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশের আইন, বিচার বিভাগ, প্রশাসন, ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি, শিক্ষা সবকিছুকে পঙ্গু করেছিলেন। ইয়াবা বিয়ে নষ্ট করেছিলেন সমাজকে। এই খুনি বাংলাদেশের মানুষকে খুন করে পালিয়ে গিয়ে ভারতকে দিয়ে যে চক্রান্ত করছে আমরা তা হতে দেব না। ১৮ বছরে এই খুনি হাসিনা পুলিশ বাহিনী, হারুন বাহিনী, ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে বিএনপির লড়াকুদের কিছু করতে পারেন নাই, আগামীতেও পারবে না।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা ভোট ও দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ ১৮ বছর রাজপথে রক্ত দিয়েছিলাম। সবশেষ দেশে ছাত্র-জনতাকে নিয়ে জুলাইয়ের কোটা আন্দোলনকে কৌশলে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে পরিণত করেছিলাম। আমাদের আন্দোলনের শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরেও দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা একটি ধাপ পার করেছি সেটা হলো শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের ধাপ। কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এখন নির্বাচন দরকার। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলে এই মুহূর্তে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।

এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন না দিয়ে সংস্কারের নামে তালবাহানা করে দশটি মাস পার করেছে। কিন্তু সংস্কার করতে এক মাস লাগে। তারা সেটি না করে গদিতে বসে কে কীভাবে পয়সা কামাবে সে ধান্দা করছে।

এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার ইস্যু টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পিএস ১৫ বছরে ৪০০ কোটি চুরি করেছে, আর বর্তমান উপদেষ্টার পিএস ৫ মাসে ৪০০ কোটি টাকা চুরি করেছে। এতে বোঝা যায়, কত বড় চোর এরা।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিএনপি নিয়ে ছিনিমিনি খেলার চিন্তা করবেন না। বিএনপি কিন্তু শেখ হাসিনাকে শিক্ষা দিয়েছে, আপনাকে শিক্ষা দিতে আমাদের সময় লাগবে না। সুন্দরভাবে সুবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিন। দেশ বিদেশে আপনার অনেক সুনাম আছে, আপনি বাচ্চাদের কথামতো, কয়েকজন লোভী উপদেষ্টার কথা মত আপনার পথ থেকে বিচলিত হবেন না। আপনি সঠিক রাস্তায় হাঁটুন সুন্দর একটি নির্বাচন দিন। এটাই হবে আপনার প্রধান সংস্কার। এটাই হবে গণতন্ত্র প্রধান সংস্কার। এই মুহূর্তে নির্বাচন দিলে জাতী উপকৃত হবে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

কামাল জামান মোল্লা আরও বলেন, সুন্দর একটি নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তারেক রহমান বাংলাদেশের হাল ধরে গণতন্ত্রকে ঢেলে সাজিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নত দেশ হিসেবে তুলে ধরবে ইনশাল্লাহ।

(ঢাকাটাইমস/০১জুন/এলএম/এমআর)