লন্ডনে টিউলিপের সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত: প্রধান উপদেষ্টা

শেখ হাসিনা সরকারের সময় হওয়া লুটপাট থেকে টিউলিপ সিদ্দিকের সুবিধা পাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে বিচারের জন্য দেশে ফেরত পাঠানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সানডে টাইমকে এই সাক্ষাৎকারটি দেন প্রধান উপদেষ্টা।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের নানা কেলেঙ্কারির খবর সামনে কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। সম্প্রতি টিউলিপের বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্রদের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নেওয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে।
মুহাম্মদ ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেন, ‘লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পত্তির বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। তদন্তে যদি প্রমাণ হয়, তিনি প্লেইন (সরাসরি) ডাকাতির সুবিধাভোগী, তাহলে সম্পত্তিগুলো ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে তার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
এরইমধ্যে টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। এছাড়া সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের কয়েকজন টিউলিপের বিনামূল্যের ফ্ল্যাট পাওয়া নিয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেন, ‘টিউলিপ সিদ্দিকের মতো একজন দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই যখন অভিযোগের মুখে থাকেন, তা আসলে নির্মম রসিকতা হয়ে যায়।’
‘‘তিনি দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হলেন, তারপর [লন্ডনের সম্পত্তি নিয়ে] নিজের পক্ষে সাফাই গাইলেন। হয়তো আগে বিষয়টি বুঝতে পারেননি। কিন্তু এখন যখন বুঝতে পেরেছেন, তখন তো বলা উচিত: ‘দুঃখিত, তখন আমি বিষয়টি বুঝিনি, আমি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছি এবং পদত্যাগ করছি।’ কিন্তু তিনি তা না করে উল্টো নিজের পক্ষে সাফাই গাইছেন’’— যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে পাবনার রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তদন্তে নাম এসেছে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকেরও। এ ঘটনায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা অফিসের ন্যায় ও নৈতিকতা দল।
অভিযোগ উঠেছে, রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৩ সালে যখন রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনার সময় মধ্যস্থতা করেন টিউলিপ। ওই সময় তিনি ব্রিটেনের কোনো সরকারি দায়িত্বে ছিলেন না।

মন্তব্য করুন