আধ্যাত্মিক নেতা আগা খানের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:২৮
অ- অ+

ইসমায়েলি মুসলিম সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা যুবরাজ করিম আল হুসাইনি ওরফে আগা খান চতুর্থ ইন্তেকাল করেছেন। বুধবার দক্ষিণ ইউরোপের দেশ পর্তুগালের লিসবনে তার জীবনাবসান হয়েছে।

আগা খান চতুর্থের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে তিনি যুবরাজ রহিম আগা খানকে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন।

শোকবার্তায় তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি গভীর দুঃখের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আপনার শ্রদ্ধেয় পিতা ইসমায়েলি মুসলিমদের ৪৯তম বংশগত ইমাম মাওলানা শাহ করিম আল-হুসাইনির (আগা খান চতুর্থ) মৃত্যুতে আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

ড. ইউনূস বলেন, আগা খান চতুর্থের দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং জনগণের কল্যাণে অবিচল অঙ্গীকার দৃষ্টান্তমূলক। দশকের পর দশক ধরে সহানুভূতি, সম্প্রীতি এবং বহুত্ববাদ চর্চার জন্য আমি তাকে শ্রদ্ধা করেছি। অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও অনুরাগের সঙ্গে আমি মহামান্যের সঙ্গে আমার কথোপকথন এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশের সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তার চিন্তাভাবনার কথা স্মরণ করি।

তিনি বলেন, আগা খান চতুর্থের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বকে আমি চিরকাল লালন করবো। আগা খান ফাউন্ডেশনের বোর্ডে তার সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য বিরল সম্মানের ছিল এবং অনেক বোর্ড সভা ও কনফারেন্সে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছি।

বাংলাদেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তাকে স্মরণ করব, কারণ তিনি আমাদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছিলেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রচেষ্টায় সহায়তা করেছিলেন এবং ঐতিহ্য রক্ষায় অবদান রেখেছিলেন। অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য সত্যিই একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত ছিল, যখন ‘আগা খান আর্কিটেকচারাল অ্যাওয়ার্ড’ একটি সাহসী এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্তের জন্য দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশের অনেকেই আগা খান চতুর্থকে হৃদয়ে ধারণ করবে। কারণ তিনি ২০১৩ সালে একটি সম্প্রসারিত প্রটোকলের মাধ্যমে একেডিএনকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন। ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত আগা খান একাডেমি তার দূরদর্শিতা ও দৃঢ়তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমি এবং বাংলাদেশের জনগণ আখা খানের মূল্যবান উত্তরাধিকারকে সম্মান জানিয়ে প্রটোকলের বিভিন্ন বিধান কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে প্রস্তুত রয়েছি বলে উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।

শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি যখন বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি, তখন আমি নিজের চোখে দেখেছি কীভাবে আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (একেডিএন) উদ্যোগগুলো অমোচনীয় চিহ্ন রেখে গেছে। বিশেষ করে শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রতি তার মনোনিবেশ সত্যিকার অর্থে পরিচয় বা স্বাতন্ত্র্যের ঊর্ধ্বে আত্মাকে স্পর্শ করার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। বাংলাদেশে যেভাবে তিনি আমাদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মন পরিবর্তনে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন, ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে চেয়েছিলেন এবং দুর্বলদের সমর্থন করতে চেয়েছিলেন সেভাবে আমরা মহামান্যকে স্মরণ করবো।’

শোকবার্তায় আরও বলা হয়, এই অপরিসীম দুঃখের সময়ে, আমরা আপনি, আপনার পরিবার এবং বিশ্বজুড়ে পুরো ইসমায়েলি সম্প্রদায়ের সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। আপনারা মহামহিমের স্থায়ী উত্তরাধিকারের প্রতি আকৃষ্ট হোন, যার সেবা ও মানবতার মানসিকতা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে যাবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের চিন্তা ও প্রার্থনা আপনার ও আপনার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সাথে রয়েছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ এই কঠিন সময়ে মহামান্যকে চিরশান্তি এবং আপনার পরিবারকে সান্ত্বনা দিন।

(ঢাকাটাইমস/৬ফেব্রুয়ারি/এজে)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাজারবাগে ঈদের নামাজ আদায় ডিএমপি কমিশনারের, শুভেচ্ছা নিলেন সদস্যদের
পশুর বর্জ্য অপসারণ: ১০ হাজার জনবল ও দুই হাজার যানবাহন নামিয়েছে ডিএসসিসি 
কোরবানির মাংস দ্রুত বরফ করতে ফ্রিজের তাপমাত্রা কত রাখবেন?
সীমান্তে চামড়া পাচার ঠেকাতে কঠোর বিজিবি
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা