বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আজ, তামাক সেবনে ৭০ ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩১ মে ২০২৫, ০৯:২৯| আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ১২:০৫
অ- অ+

আজ ৩১ মে, পালিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য— “তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।” এই প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সংগঠন তামাকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী অন্তত তিন কোটি ৭০ লাখ কিশোর–কিশোরী নিয়মিতভাবে তামাক ব্যবহার করে এবং যাদের নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডে আসক্ত করতে কোম্পানিগুলো নানা ধরনের কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে সুগন্ধিযুক্ত তামাকপণ্য বাজারজাতকরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের তামাকপণ্য সহজলভ্য করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেলিব্রেটিদের ব্যবহার করা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান এবং শক্তিশালী আইন ও কর পদক্ষেপের বিরোধিতা করা অন্যতম।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (সিডিসি) গবেষণায় দেখা গেছে, ২১ বছর বয়সের আগেই যারা তামাকে আসক্ত হয়ে পড়ে, তাদের মধ্যে নিকোটিন নির্ভরতা এবং আমৃত্যু তামাক ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

টোব্যাকো অ্যাটলাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ৩১ শতাংশ বন নিধনের পেছনে তামাক চাষ দায়ী। গবেষণায় দেখা গেছে, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার তিনটি উপজেলায় তামাকপাতা শুকানোর (কিউরিং) কাজে এক বছরেই প্রায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি কাঠ ব্যবহৃত হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর ১২৫টিরও বেশি দেশের প্রায় চার মিলিয়ন হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয় এবং শীর্ষ তামাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ভুক্ত দেশ। অন্যদিকে পৃথিবীব্যাপী উৎকৃষ্ট মানের জমি ক্রমবর্ধমান হারে তামাক চাষে ব্যবহৃত হওয়ায় খাদ্য ফসলের জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। এসব জমি খাদ্যফসল ফলানোর কাজে ব্যবহার করা গেলে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।

বাংলাদেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম, মাত্র তিন কোটি ৭৬ লাখ সাত হাজার একর। অথচ তামাক চাষে ব্যবহৃত মোট জমির পরিমাণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। বিশ্বের মোট তামাকের এক দশমিক তিন শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। অন্যদিকে বাংলাদেশে তামাকজনিত অসুস্থতায় প্রতিবছর এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দেশে মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মক্ষমতা হ্রাসের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞের মতে, তামাকের মধ্যে ৭০টি ক্যানসার তৈরির উপাদানসহ প্রায় ৭০০০টি বিষাক্ত উপাদান রয়েছে, অথচ অবলীলায় তামাকের ব্যবহার চলছে। প্রতিদিন ধূমপানে আর্থিক ক্ষতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন আমরা হচ্ছি, সেটা ভাবতে হবে।

উল্লেখ্য, তামাক গাছ বামন জাতের স্বল্পজীবী উদ্ভিদ। পরিপূর্ণ তামাক গাছের পাতাকে বিশেষভাবে শুকিয়ে সেই পাতাকে উদ্দীপক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তামাক পাতা দিয়ে সিগারেট, বিড়ি, চুরুট, জর্দা, গুল, নস্যি ও অন্যান্য উদ্দীপক দ্রব্য তৈরি করা হয়। তামাক মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তামাক ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হয়। এটি ক্যানসার ও হৃদরোগসহ নানা ধরনের কঠিন রোগ সৃষ্টি করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

(ঢাকাটাইমস/৩১ মে/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সিএমএসএমই ঋণ বাড়াতে রূপালী ব্যাংকের উদ্যোগ
শেখ হাসিনার বিচার হলে জিএম কাদেরের কেন হবে না: রাশেদ
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বনানীতে দোয়া ও খাবার বিতরণ
মির্জাপুরে বিদ্যুতের খুঁটির নিচে চাপা পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা