চুয়াডাঙ্গায় কর্মসংস্থানের সেমিনারে তোপের মুখে আয়োজকরা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৭:৫৩

‘বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনার করে আমন্ত্রিতদের নানা প্রশ্নে তোপের মুখে পড়েছেন আয়োজকরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ সেমিনার হয়।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন। সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারের শুরুতেই বৈদেশিক কর্মসংস্থানের দক্ষতা নিয়ে প্রমাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুশফিকুর রহমান।

এ সময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন জেলা শহরে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে নামমাত্র টাকায় বিদেশে যাচ্ছে তৃণমূলের নারী-পুরুষ। এতে করে দেশে বাড়ছে রেমিটেন্সের পরিমাণ। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতির চাকা।

সেমিনারে বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রমও তুলে ধরেন কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই তোপের মুখে পড়েন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুশফিকুর রহমান।

এ সময় বক্তৃতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, বছরে শুধু একটি দিন ঘরের মধ্যে প্রোগ্রাম করলেই মানুষ সচেতন হবে না। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে আগে সচেতন করতে হবে। এজন্য প্রতিটি ইউনিয়নে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অধিদপ্তরের উঠান বৈঠকসহ সচেতনামূলক অনুষ্ঠান করতে হবে। তা নাহলে বিদেশে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে দালালদের ওপরই নির্ভরশীল হতে হবে।

জামজামি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের জেলাতে বিদেশে যেতে হলে দালালনির্ভরই থাকতে হয়। কারণ এ জেলাতে জনশক্তির অফিস আছে এটিই মানুষ জানে না। অথচ সরকার প্রতি বছর এ খাতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে।

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমুন আহাম্মেদ ডন বলেন, প্রতিদিনই স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় দেখি বিদেশে পাঠানোর নামে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ টাকা। প্রতারিত মানুষ ঘুরছে দ্বারে দ্বারে। অথচ আমাদের জেলার কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের কর্মকর্তাদের এসব বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপের খবর দেখি না। বিষয়টি দুঃখজনক।

আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র হাসান কাদির গণু কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমাদের জেলাতে শতশত মানুষ বিদেশে গিয়ে দালালদের হাতে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে দেশে ফিরছেন। অনেকে বিদেশের কারাগারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কিন্তু এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপই নেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

গণমাধ্যমকর্মী শাহ আলম সনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলাতে কয়েকশ’ দালাল সক্রিয় রয়েছে। তাদের আগে আইনের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক ব্যানার লিফলেট ফেস্টুন ও বিলবোর্ড দিলে মানুষ কিছুটা হলেও সচেতন হবে।

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন বলেন, তৃণমূলের পিছিয়ে পড়া জনগণকে দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে এর সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। এজন্য সমাজের সবস্তরের মানুষের সহযোগিতা চান তিনি।

সমাপনী বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন আলী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরও সেদিকে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো উপজেলা পর্যায়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের দক্ষতা ও জনসচেনতা নিয়ে প্রোগাম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তার বিস্তৃতি ছড়িয়ে দেয়া হবে প্রান্তিক পর্যায়ে। স্থানীয় কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা অবশ্যই এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নেবেন।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম আজম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, বাড়াদী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা, হারদী টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান।

(ঢাকাটাইমস/৬ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :