করিডোরের কল্পকাহিনী দেশে অশান্তি সৃষ্টিকারীদের শিল্পকর্ম: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জুন ২০২৫, ১৯:৪৭
অ- অ+

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের জন্য করিডোর দেওয়ার বিষয়টা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, যারা অসত্য কল্পকাহিনী বানিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত, এটা তাদেরই শিল্পকর্ম। এ বিষয়ে জনগণকে হুঁশিয়ার থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এই ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আগামী নির্বাচনের অনুষ্ঠানের সময়ও ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

করিডোর নিয়ে দেশে চলমান আলোচনা-সমালোচনার আবহে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা লক্ষ করেছি, রাখাইনের জন্য বাংলাদেশ করিডোর দিয়ে দিয়েছে বলে একটা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি সুস্পষ্টভাবে বলছি, এটি সর্বৈব মিথ্যা। এটা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প। যারা অসত্য কল্পকাহিনী বানিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত, এটা তাদেরই শিল্পকর্ম। আপনারা এ বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকবেন। কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবেন না। এসব অপপ্রচার সত্ত্বেও আমরা লক্ষ্যচ্যুত হবো না। এই জটিল সমস্যাটি সমাধানে আমাদের কাজ চালিয়ে যাব।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, আমাদের দেশে এখন ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। প্রায় ১ লক্ষ রোহিঙ্গা এসেছে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর সময়কালে, যখন রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল। সেখানে চলমান সংঘাত ও মানবিক পরিস্থিতির কারণে এখনো অনেকে আসতে চেষ্টা করছেন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ করতে এবং যারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

বর্তমান সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রায় মৃত অবস্থায় ছিল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক এজেন্ডা থেকে ইস্যুটি ঝরে পড়েছিল। সেই অবস্থা থেকে আমরা ইস্যুটিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টির সম্মুখভাগে নিয়ে আসতে পেরেছি।

ড. ইউনূস বলেন, আমি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছিলাম। আপনারা জেনে খুশি হবেন, জাতিসংঘের সকল সদস্যরাষ্ট্র এ বিষয়ে একমত হয়েছে এবং তারা একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। একই সাথে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক জনমত গঠন করতে পেরেছি। গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘের মহাসচিব এনতোনিও গুতেরেজ পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছেন যে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ও আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সরকারসহ সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমরা যত দেশেই সফর করেছি সব দেশে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় নেতা ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। তারাও ইতিবাচকভাবে আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিবের গত মার্চ মাসে ঢাকা সফরের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মহাসচিব রাখাইন‌ রাজ্যে মানবিক বিপর্যয়ের মোকাবেলার জন্য একটি ত্রাণ চ্যানেলের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এই প্রস্তাবটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক হবে। বিষয়টি প্রস্তাব পর্যায়েই রয়ে গেছে

(ঢাকাটাইমস/৬জুন/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যের ধারক মজাদার মেজবানি মাংস, যেভাবে রান্না করবেন
অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রতীরে দেখা মিলল রহস্যঘেরা ভয়ংকর মাছ, পৃথিবীর দিন শেষ!
ফিরোজায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
ঈদে ছয় সিনেমা মুক্তি, কোনটি কতটি হলে চলছে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা