অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রতীরে দেখা মিলল রহস্যঘেরা ভয়ংকর মাছ!

নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের কাছে হঠাৎই দেখা মিলল রহস্যঘেরা ভয়ংকর মাছের। এই মাছের আসল নামটি হল ওরাফিস। একে চলতি ভাষায় ডুমসডে ফিস হিসাবেও সকলে জেনে থাকে। কোনো কোনো দেশে এই মাছকে শয়তানের মাছও বলে থাকে। সম্প্রতি তিনবার শয়তানের মাছের দেখা মিলেছিল অস্ট্রেলিয়ার দ্বীপরাজ্য তাসমানিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায়। কিংবদন্তি আছে যখন শয়তানের মাছের তিনবার দেখা মিলে তখন পৃথিবীতে বিপর্যয় নেমে আছে।
সপ্তাহের শুরুতেই তাসমানিয়ায় পাওয়া যায় একটি বিরল ওরাফিশ। এরপর নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের উপকূলে ও অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতীরে ভেসে ওঠে আরও দুটি মাছ। তিনটি ঘটনাই ঘটে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে, আর তাতেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এই রহস্যময় সামুদ্রিক প্রাণীর আসল নাম ওরাফিশ, তবে একে ‘ডুমসডে ফিশ’ বা ‘শয়তানের মাছ’ বলেও ডাকা হয়। জাপানি লোকবিশ্বাসে এই মাছের দেখা মিললে তা ভূমিকম্প বা সুনামির ইঙ্গিত বহন করে। অতীতে ক্যালিফোর্নিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় এই মাছের আবির্ভাবের পরপরই ঘটেছিল বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
এই মাছ পানির অনেক গভীরে থাকে। কয়েকবছর আগে অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলের এক দ্বীপে এই মাছের দেখা মিলেছিল। ক্যালিফোর্নিয়াতেও মিলেছিল। আর এই দুই জায়গাতেই ঘটেছিল প্রাকৃতিক বিপর্যয়। অরফিশকে খুবই বিরল মাছ বলে মনে করা হয়। কারণ তারা সমুদ্রের কয়েক হাজার ফুট নীচে সাঁতার কাটে! এই মাছ ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের আকৃতি সাপের মতো। সমুদ্র দানবও বলা হয় এই মাছকে। মাছ-বিশেষজ্ঞদের মতে, এরা ৩০০০ ফুট গভীরতায় থাকে। প্রায়ই এদের মৃতদেহ সমুদ্রের তীরে ভেসে থাকতে দেখা যায়। এই মাছ ধরা খুব সহজ নয়।
তবে জাপানি সংস্কৃতি এবং কিছু অন্যান্য এশীয় বিশ্বাসে এই ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবে নেওয়া হচ্ছে না। তাদের মতে, শয়তানের মাছের দেখা মানেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অশনিসংকেত। ভূমিকম্প, সুনামি কিংবা ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়—কোনো না কোনো দুর্যোগ নেমে আসবে বলেই তাঁদের বিশ্বাস।
বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নন, এই মাছের হঠাৎ ভেসে ওঠা কোন ইঙ্গিত বহন করে। কেউ বলছেন, এটা নিছক কাকতালীয়। আবার কেউ মনে করছেন, সমুদ্রের গভীর পানিতে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটছে, যার প্রভাব পড়ছে গভীরজলের প্রাণীদের উপর।
তবে এটাও সত্যি, মানুষ আজও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেনি সাগরের অতল রহস্য। হাজার ফুট নিচের জগত এখনও আমাদের জানার বাইরে। শয়তানের মাছের আগমন সত্যিই দুর্যোগের বার্তা, না পৃথিবীর দিন শেষ।
(ঢাকাটাইমস/০৮জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন