বোয়ালমারীতে চুরির অপবাদে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককে ২ দিন আটক রেখে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছে পরিবার। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ময়না ইউনিয়নের খরসূতি গ্রামে।
নিহত যুবকের নাম বাবু শেখ, সে উপজেলার ময়না ইউনিয়নের খরসূতি গ্রামের মিজানুর শেখের ছেলে। সে বোয়ালমারী পৌরসভার সাবেক মেয়র শুকুর শেখের ভাটায় চাকরি করত।
হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তরা হলো, খরসূতি গ্রামের মৃত পাচু শেখের ছেলে জাফর শেখ (৫০), তার ছেলে জসিম শেখ (২৫), মো. আব্বাস শেখ (২২)ও জাফর শেখের স্ত্রী শিল্পী বেগম (৪৬)। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।
নিহত যুবকের স্বজনরা জানান, হত্যায় অভিযুক্ত জসিম শেখের কয়েকদিন আগে অটোভ্যানের ব্যাটারি চুরি যায়। মঙ্গলবার বাবু ছুটিতে বাড়ি এলে জসিম শেখ তাকে ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে আটক রাখে। এ সময় আটক রেখে তাকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালানো হয়। পরিবারের লোক খবর পেয়ে জসিম শেখের বাড়িতে গিয়ে তাকে ছেড়ে দিতে অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে কাকুতি-মিনতি জানায়। কিন্ত তাদের কোন কথা কর্ণপাত করেনি পাষণ্ড জসিম শেখ ও তার দুই ছেলে ও স্ত্রী। বরং পরিবারের লোকজনের সামনেই শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
পরদিন বুধবার সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন ফের ওই বাড়িতে গেলে ঘরের বারান্দায় বাবুর মৃতদেহ দেখতে পায়। এ সময় জসিম শেখের পরিবার দাবি করে সে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশ রাতে জসিম শেখের বাড়ি থেকে নিহত বাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত যুবকের মা দিনারা বেগমের দাবি তার ছেলেকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নিহতের বড়ভাই মো. সোহেল শেখ জানায়, আমি বোয়ালমারী বাজারে ব্যবসা করি রাতে বাড়ি ফিরে জানতে পারি আমার ভাইকে চুরির অপবাদে আটক রেখেছে, তখন জসিম শেখের বাড়িতে যাই। তাদেরকে অনুরোধ করি আমার ভাইকে ছেড়ে দিতে কিন্তু তারা ব্যাটারি বা টাকা না দিলে তাকে ছাড়বে না সাফ জানিয়ে দেয়। পর দিন সন্ধ্যায় খবর পাই আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে। আমার ভাইকে মেরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে জসিম শেখ ও তার ছেলেরা। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব জানান, খবর পেয়ে আমরা মৃতদেহ জসিম শেখের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বুঝা যাবে। আমরা অধিকতর তদন্ত চলমান রেখেছি, পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
(ঢাকাটাইমস/১০ আগস্ট/ইএইচ)

মন্তব্য করুন