শীর্ষ হুতি নেতাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলায় ভূমিকার জন্য ইয়েমেনের সশস্ত্র হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চারজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তিরা হলেন, হুতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসের আল-আতিফি, হুতি নৌবাহিনীর কমান্ডার মুহাম্মদ ফাদল আবদ আল-নবী, উপকূলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান মুহাম্মদ আলী আল-কাদিরি এবং ক্রয় পরিচালক মুহাম্মদ আহমেদ আল-তালিবি।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে লোহিত সাগর চলাচল করা জাহাজে বেআইনি এবং বেপরোয়া হামলার জন্য হুতিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া অব্যাহত রাখব।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই চার ব্যক্তির যুক্তরাজ্যে থাকা সম্পদ বাজেয়াপ্ত হবে। পাশাপাশি তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ করতে পারবেন না। এ ছাড়া অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে তাদের। আগে থেকে ১১ জন হুতি নেতা এবং হুতিদের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে।
এদিকে মার্কিন ট্রেজারি বলেছে, আল-আতিফি প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছিলেন- মার্কিন নেতৃত্বাধীন নৌ জোটের ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যে কোনও পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসাবে লোহিত সাগরকে কবরস্থানে পরিণত করবে।
যুক্তরাষ্ট্র আরও দাবি করছে, আল-তালিবি ইরানের দেওয়া অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং অন্যান্য জিনিস ইয়েমেনে পাচারের প্রচেষ্টায় জড়িত।
মার্কিন ট্রেজারির সন্ত্রাসবাদ ও আর্থিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ইন্টেলিজেন্স ব্রায়ান নেলসন এক বিবৃতিতে বলেন, লোহিত সাগরে বাণ্যিজিক জাহাজ এবং তাদের বেসামরিক ক্রুদের ওপর হুতিদের ক্রমাগত হামলা ... আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন এবং নৌচলাচলের স্বাধীনতাকে ব্যাহত করছে, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের সাথে আজকের যৌথ পদক্ষেপ এই আক্রমণগুলো বন্ধ করার জন্য সমস্ত কর্তৃপক্ষকে আমাদের সুস্পষ্ট বার্তা এবারের নিষেধাজ্ঞা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন জানিয়ে দুই মাস ধরে লোহিত সাগরে চলাচলরত বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। এতে লোহিত সাগরের এ রুটে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ম্যার্স্ক, সিএমএ সিজিএমসহ বড় বড় শিপিং প্রতিষ্ঠানগুলো।
এরপরই হুতিদের আক্রমণ থেকে লোহিত সাগরের এ সমুদ্র পথকে নিরাপদ রাখতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডাসহ ১০টি দেশ নিয়ে সামুদ্রিক জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যেই হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে ইয়েমেনে কয়েক দফা সরাসরি বিমান হামলা চালায় ব্রিটিশ ও মার্কিন বাহিনী।
তবে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে তাদের এ আক্রমণ অব্যাহত থাকবে।
(ঢাকাটাইমস/২৬জানুয়ারি/এমআর)

মন্তব্য করুন