ট্রাম্প প্রশাসনে দায়িত্ব পালনকালে ইলন মাস্কের মাদক সেবনের তথ্য ফাঁস

বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় থাকা ইলন মাস্ককে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিয়মিতভাবে মাদক সেবনের অভিযোগ উঠেছে মাস্কের বিরুদ্ধে।
বিশ্ব গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে মাস্ক ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডজ)’ নামে একটি বিশেষ ইউনিটের নেতৃত্ব দেন এবং গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত বৈঠকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন। তবে একই সময় তিনি নিয়মিতভাবে কেটামিন, এক্সট্যাসি এবং সাইকেডেলিক মাশরুমের মতো উচ্চমাত্রার মাদক গ্রহণ করতেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মাস্কের মাদক গ্রহণের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে, তা তার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে তার মূত্রথলির জটিলতার পেছনে নিয়মিত কেটামিন সেবনকে দায়ী করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, মাস্ক প্রতিদিন কেটামিন গ্রহণ করতেন এবং সবসময় সঙ্গে রাখতেন প্রায় ২০ ধরনের ওষুধভর্তি একটি বাক্স, যেখানে অ্যাডেরলের মতো উত্তেজক ওষুধও ছিল। একটি ছবিতে স্পষ্ট দেখা যায়, সেই বাক্সে ছিল অ্যাডেরল চিহ্নিত বড়ি।
ইলন মাস্ক অবশ্য দাবি করেছেন, তার কেটামিন সেবন চিকিৎসকের পরামর্শে হতাশা কমানোর জন্য, এবং তিনি প্রতি দুই সপ্তাহে একবার তা গ্রহণ করতেন। তবে প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের বসন্ত নাগাদ তার কেটামিন সেবনের মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে যায়, এমন সময় তিনি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং প্রায় ২৭৫ মিলিয়ন ডলার অনুদানও দেন প্রচারণায়।
মাস্কের প্রভাবশালী অবস্থানের কারণে হোয়াইট হাউসে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল এবং প্রশাসনিক বাজেট ও কাঠামো সংস্কারে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তবে হোয়াইট হাউস তার মাদক গ্রহণের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি এবং তাকে কখনো ড্রাগ টেস্টে অংশ নিতে বলা হয়েছিল কি না, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যদিও প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক ড্রাগ টেস্ট চালু রয়েছে, তবে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মাস্ক আগেই সতর্কবার্তা পেয়ে যেতেন এবং সে কারণে এসব পরীক্ষায় ধরা পড়তেন না।
এছাড়াও মাস্কের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কেও একাধিক বিতর্কিত তথ্য উঠে এসেছে। প্রাক্তন সঙ্গিনী গায়িকা গ্রাইমস তাদের সন্তানের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাশাপাশি, লেখিকা অ্যাশলি সেন্ট ক্লেয়ার দাবি করেছেন, মাস্কের সঙ্গে তার গোপন সম্পর্ক থেকে একটি সন্তান জন্ম নিয়েছে এবং মাস্ক বিষয়টি গোপন রাখতে আদালতে গ্যাগ অর্ডার চেয়েছেন।
মাস্কের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও নিউরোসায়েন্টিস্ট ফিলিপ লো এ প্রসঙ্গে বলেন, “ইলন তার খারাপ আচরণের সীমা ক্রমাগত অতিক্রম করে চলেছে।”
এই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁসের পর প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, মাস্ক নিজে এই অভিযোগের জবাবে কী বলেন এবং প্রশাসন ও আদালত থেকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না।
(ঢাকাটাইমস/৩১ মে/আরজেড)

মন্তব্য করুন