গাজায় ধ্বংসযজ্ঞে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করছে কোন কোন দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩১ মে ২০২৫, ১৪:৩৮| আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ১৪:৪৫
অ- অ+

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের চালানো ভয়াবহ নৃশংসতা ও নির্বিচার হামলার কারণে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজায় চলমান বর্বরতা বন্ধে ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি বিশ্বজুড়ে জোরালো হচ্ছে। এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে—কে বা কারা এই আগ্রাসী রাষ্ট্রটিকে অস্ত্র সরবরাহ করছে?

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)-এর তথ্য অনুযায়ী, তেলআবিবে আমদানিকৃত অস্ত্রের ৯৯ শতাংশই সরবরাহ করে তাদের দুই প্রধান মিত্র—যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। এছাড়া ইতালিও ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে।

দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সামরিক মিত্র। শুধু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকেই ওয়াশিংটন তেলআবিবে ৯০,০০০ টনের বেশি সমরাস্ত্র পাঠিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে (১৯৪৬–২০২৪) যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দিয়েছে প্রায় ২২৮ বিলিয়ন ডলার।

ইসরায়েলের মোট অস্ত্র আমদানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এতে রয়েছে যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন, বোমা ও বিভিন্ন ক্ষতিকর যুদ্ধসরঞ্জাম।

ইসরায়েলের নৌসক্ষমতা বৃদ্ধিতে জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। দেশটি থেকে ইসরায়েল ‘নাবাল ফ্রিগেটস’, টরপেডো, সাঁজোয়া যান, ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র এবং গোলাবারুদ আমদানি করে। শুধু ২০২৪ সালেই জার্মানি থেকে ইসরায়েল ১৩১ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র পেয়েছে।

জার্মান সরকারের এসব অস্ত্র বিক্রির বিরুদ্ধে দেশটির জনগণের মধ্যে প্রতিবাদ দেখা দিলেও এখনো আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।

ইতালির অস্ত্র রপ্তানি আইন অনুযায়ী, কোনো সংঘাতে জড়িত দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ। তবে দেশটির প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যমের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি হামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও ২০২৪ সালে ইতালি ইসরায়েলে ৫.২ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র রপ্তানি করেছে। এতে প্রশ্ন উঠেছে—ইতালি কী নিজ দেশের আইন লঙ্ঘন করছে?

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্য থেকেও ইসরায়েলে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্রিটেনে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্রতর হচ্ছে।

তবে এর বিপরীতে কিছু ইউরোপীয় দেশ সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। কেউ কেউ ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে, কেউ আবার রপ্তানির লাইসেন্স স্থগিত রেখেছে। যুদ্ধবিরোধী এসব পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে।

গাজায় চলমান সংঘাতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। কিন্তু বড় বড় শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর দ্বিমুখী নীতির কারণে অস্ত্র প্রবাহ থামছে না। এ অবস্থায় বিশ্বনেতারা কি মানবতার পক্ষে দাঁড়াবে, নাকি কূটনৈতিক স্বার্থকে প্রাধান্য দেবে—এই প্রশ্ন এখন সবার সামনে।

(ঢাকাটাইমস/৩১ মে/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
চ্যালেঞ্জিং স্কোর করেও হোয়াইট ওয়াশ বাংলাদেশ, হ্যারিসের সেঞ্চুরি
ইশরাকের শপথ সংক্রান্ত আদেশের কপি ইসিতে, সোমবার বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত
সফররত চীনা কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগে অনেক আত্মবিশ্বাসী: চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী
টাইগারদের চ্যালেঞ্জিং স্কোর, হোয়াইট ওয়াশ এড়াতে বোলিংয়ে তাকিয়ে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা