হরতালসহ আ.লীগের নানা কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

আত্মগোপনে থেকেই ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে হরতালসহ পতিত আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নানা কর্মসূচি ঘোষণার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে সেটি শেষ হয়।
সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের শিক্ষার্থী, শ্রমিকদের প্রকাশ্যে গুলি করে, কুপিয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সেই খুনিদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখিনি।’
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের রক্তের সঙ্গে এর চেয়ে বড় বেইমানি আর হতে পারে না।’ তার দাবি, ‘অনতিবিলম্বে খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অনতিবিলম্বে খুনিদের বিচারের আওতায় আনুন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগ নেন। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। শহীদ ভাইদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন।’
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পর ছাত্রলীগ বিভিন্ন রূপে ফিরে এসেছে। কখনও আনসার লীগ আবার কখনও বা রিকশাচালক হয়ে ফিরে এসেছে। তারা কতটা স্পর্ধা দেখালে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা কাদের মদদে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার সাহস করে, সেই জবাব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি অন্তর্বর্তী সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ তাদের মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, তারা বাংলাদেশে কোনো নাশকতা করার আগেই তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যদি আপনারা ব্যর্থ হন, তাহলে বাংলাদেশের জনগণই তাদের প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট।’
সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দুই হাজার শহীদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। কিন্তু ছাত্রলীগ নতুন কর্মসূচি দিয়ে আবার মাঠে আসার পায়তারা করছে। সরকারের কাছে জানতে চাই, পাঁচ মাস অতিবাহিত না হতেই তারা কিভাবে কর্মসূচি ঘোষণা দেয়।’
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি দাবির লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করবে আওয়ামী লীগ। ৬ ফেব্রুয়ারি দেশে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক ‘কঠোর’ হরতাল।
বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলা প্রত্যাহার এবং ‘প্রহসনমূলক বিচার’ বন্ধের দাবি জানানো হয়। এছাড়া সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে দলটির সংশ্লিষ্ট কারও স্বাক্ষর ছিল না।
(ঢাকাটাইমস/৩০জানুয়ারি/এজে)

মন্তব্য করুন