ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের আয়োজন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৮ জুন ২০২৫, ১৪:৫৪| আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ১৫:০৪
অ- অ+

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত চরমে পৌঁছানোর পর নড়েচড়ে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর ঘোষণা দেয়নি ওয়াশিংটন। তবে পর্দার আড়ালে পুরো পরিস্থিতি তদারক ও সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে দেশটি। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্র এখন এমন এক অবস্থানে আছে, যেখান থেকে সরাসরি যুদ্ধে প্রবেশ করা মাত্র সময়ের ব্যাপার।

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ব্যাপক সামরিক শক্তি পাঠাচ্ছে। দেশটির বিমানবাহী রণতরী ‘নিমিটজ’ এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে অগ্রসরমান। এতে রয়েছে ৫ হাজার সেনা সদস্য এবং ৬০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান। এই শক্তি মোতায়েনকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ‘প্রতিরক্ষামূলক’ ব্যবস্থা; তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সরাসরি হামলার প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা যেতে পারে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, “আমাদের বাহিনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করাই প্রথম অগ্রাধিকার। এই অঞ্চলজুড়ে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা সামর্থ্য মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

এরই মধ্যে ইউরোপে জ্বালানি সরবরাহের জন্য বিপুল সংখ্যক বিমান পাঠিয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনী। রবিবার, ৩১টিরও বেশি কেসি-১৩৫ ও কেসি-৪৬ মডেলের জ্বালানি ট্যাংকার বিমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে জার্মানি, যুক্তরাজ্য, এস্তোনিয়া ও গ্রিসের ঘাঁটিতে পৌঁছায়।

ডায়ামি সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের বিশ্লেষক এরিক শাউটেন একে ‘অস্বাভাবিক মোতায়েন’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “এটি স্পষ্টভাবে কৌশলগত প্রস্তুতির বার্তা।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়ানো এড়াতে চাইলেও সংঘাত তীব্র হলে মার্কিন স্বার্থ রক্ষার নামেই সামরিক হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের একটি পরিকল্পনায় ভেটো দিয়েছেন। কারণ, ওয়াশিংটনের অবস্থান হলো— যতক্ষণ না আমেরিকানরা সরাসরি হামলার শিকার হচ্ছে, ততক্ষণ ইরানের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে টার্গেট করা সমর্থনযোগ্য নয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দিচ্ছে এবং আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি মোতায়েন করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪০ হাজার সেনা, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যুদ্ধজাহাজ এবং ফাইটার জেট রয়েছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, পেন্টাগন সম্প্রতি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করেছে, যা পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পন্ন এবং ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সমস্ত পদক্ষেপ একযোগে দেখলে পরিষ্কার হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়ানোর মতো সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এখন শুধু প্রয়োজন ‘সঠিক মুহূর্ত’ বা ‘উপযুক্ত অজুহাত’।

(ঢাকাটাইমস/১৮ জুন/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঝিনাইদহে লাটা হাম্বার ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
যুক্তরাজ্যের গ্লোবাল ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেল ওয়ালটন ডিজি-টেক
বৃষ্টির পর ছন্দপতন, দিনশেষে উইকেটে ধস
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা