গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার

ফিলিস্তিনি স্বধানতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা। এই পরিকল্পনার মধ্যে যুদ্ধের পরও গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখল ও ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো বিষয় রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
রবিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় এ বিষয়ে ভোটাভুটি হয়।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, আগামী কয়েকমাস ধরে পর্যায়ক্রমে গাজায় সামরিক হামলা বৃদ্ধির এই প্রস্তাবটি সর্বসম্মিতক্রমে অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
এদিকে ইতোমধ্যেই হাজার হাজার সংরক্ষিত সেনা ডেকে পাঠিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা আর হামাসকে পরাজিত করতে চাপ বাড়ানোকে তারা কারণ হিসাবে বর্ণনা করেছে। তবে সামনের সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের পরেই এই পরিকল্পনা কার্যকর হতে পারে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে গাজার আরো কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মিশর আর ইসরায়েলের মধ্যে থাকা বাফার জোনের এলাকা বৃদ্ধি করা হবে। এর ফলে হামাসের সঙ্গে নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি আলোচনায় বাড়তি সুবিধা পাবে ইসরায়েল।
এছাড়াও প্রাইভেট কোম্পানির মাধ্যমে গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহ ও বিতরণের একটি পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। এর ফলে দুই মাস ধরে সেখানে ত্রাণ সরবরাহে যে অবরোধের অবসান হতে পারে। ওই অবরোধের কারণে সেখানে খাবার ও অন্যান্য জরুরি জিনিসপত্রের ব্যাপক সংকট দেখা গিয়েছে বলে জাতিসংঘ বলেছে।
জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলো বলছে, এই প্রস্তাব মানবিক সহায়তা কর্মকাণ্ডের মূল নীতির বিরোধী এবং তারা এতে কোন সহায়তা করবে না।
ইসরায়েলি একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হারের্তজ সংবাদপত্রকে বলেছেন, নেতানিয়াহু বলেছেন, এর ফলে রেইড দেওয়ার উদ্দেশ্যে অভিযানের বদলে সামরিক হামলার নতুন লক্ষ্য হবে গাজায় স্থায়ীভাবে দখল কায়েম করা এবং সেখানে ইসরায়েলের টেকসই উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
এর আগে রবিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চীফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়েল যামিড বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের বলেছেন, ‘গাজায় অভিযান আরও শক্তিশালী এবং অভিযানের আওতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে' হাজার হাজার সংরক্ষিত সেনা ডেকে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরায়েল। কিন্তু গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মি ও ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি ইস্যুতে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত প্রায় দেড় মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন এবং আহত হয়েছেন ৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা
(ঢাকাটাইমস/০৫মে/এমআর)

মন্তব্য করুন