রোহিঙ্গাদের জন্য গান

সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে গেছে। গত অক্টোবর থেকে রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের হত্যা ও ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে নির্যাতনের হাত থেকে বেঁচে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা। তারা বলছেন, অভিযানে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে খুন, নারী ও কিশোরিদের ধর্ষণ, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে।
জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও রাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের পাশাপাশি তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে তা যথেষ্ট নয়। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধে ও তাদের অধিকার আদায়ের দাবিতে বিশ্ববিবেক অনেকটাই নীরব।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর এই নিষ্ঠুরতায় ব্যথিত মানবদরদী কবি ও গীতিকার মাহবুবুল এ খালিদও। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা এবং বিশ্ববিবেককে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান ফুটে উঠেছে তার লেখা ‘Rohingya, Rohingya, Rohingya people’ শিরোনামের গানের প্রতিটি ছত্রে। গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রখ্যাত সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।
রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতামূলক এ গানে সম্মিলিতভাবে কণ্ঠ দিয়েছেন দিনাত জাহান মুন্নী, রাজীব, এলিটা, রুমানা আক্তার ইতি ও স্মরণ।
সম্প্রতি এ গানটির অডিও ও মিউজিক ট্র্যাক প্রকাশিত হয়েছে www.khalidsangeet.com নামের ওয়েবসাইটে। পাশাপাশি গানটি ইউটিউবেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। শুধু রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনই নয়, খালিদের গান ও কবিতায় পাওয়া যায় পৃথিবীর সব নির্যাতিতের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান, যার জ্বলন্ত উদাহরণ তাঁর ‘সেভ দ্য প্যালেস্টাইন’ গানটি।
একই সঙ্গে জনসচেতনতা, প্রকৃতি ও দেশ, দেশাত্মবোধ, মানবপ্রেম, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব, খেলাধুলা ইত্যাদি বিষয়ে সমৃদ্ধ তাঁর গান-কবিতার ভাণ্ডার।
এ প্রসঙ্গে গানটির সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় বিভিন্ন দিক থেকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। আমি আশা করেছিলাম আমাদের দেশের শিল্পী-সাহিত্যিকরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে নির্যাতন চলছে তার প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু তারা এ ক্ষেত্রে অনেকটাই নীরব। অথচ মাহবুবুল এ খালিদ এই বিষয়টি নিয়ে গান লিখেছেন এবং হত্যা নয়, ভালোবাসায় বিশ্বজয় এই বাণী তার গানের মধ্যে দিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সহমর্মিতামূলক এই গানটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এই গানটির কাজ করতে ১২ থেকে ১৪ দিন সময় লেগেছে, যেখানে অন্যান্য গানে দুই-তিন দিন সময় লাগে।
খালিদের লেখা গান সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘উনি সব সময় ব্যতিক্রমধর্মী গান ও কবিতা লেখেন। তার গানে উঠে আসে মানুষের সমস্যা, কষ্ট, সম্ভাবনা, সমাজসচেতনা, সব ধর্মের ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব ইত্যাদি অসংখ্য মানবকল্যাণমূলক বিষয়। যেটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে।’
রোহিঙ্গাদের নিয়ে মানবিক আবেদনময় গানটির অডিও, মিউজিক ট্র্যাক লিংক: http://khalidsangeet.com/musics/details/rohingya-rohingya
গানটির ভিডিও লিংক: https://youtu.be/Sk53zf491JY
(ঢাকাটাইমস/২২ডিসেম্বর/এমআর)

মন্তব্য করুন