ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ল, হুমকিতে অর্থনীতি

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের চালানো হামলার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (২২ জুন) রাতের মধ্যেই মার্কিন শেয়ারবাজারে তেলের ফিউচার মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ব্যারেল দাঁড়িয়েছে ৭৬.৪৭ ডলারে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে ৩.২ শতাংশ, বর্তমানে যা ৭৪.৫৯ ডলার প্রতি ব্যারেল।
তবে শেয়ারবাজারে দেখা গেছে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। ডাও জোন্স ফিউচারস সূচক কমেছে ২৫০ পয়েন্ট বা ০.৬ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচারস ও নাসডাক ফিউচারস উভয় সূচকেই দেখা গেছে ০.৬ থেকে ০.৭ শতাংশ পতন।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে মার্কিন ডলারের মান বেড়েছে প্রায় ০.৩ শতাংশ। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক সংকটের সময় সাধারণত বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ মুদ্রা হিসেবে ডলারের প্রতি ঝুঁকে পড়েন। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির কারণে এই প্রবণতা দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে নতুন মাত্রা এবং মার্কিন হামলার জেরে বিশ্ববাজারে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে জ্বালানি তেল, বিনিয়োগ ও শেয়ারবাজারে।
আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, ইরানের পার্লামেন্ট রবিবার হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে, যা বিশ্ব জ্বালানি পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নৌপথ। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ, তবুও এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালি দিয়েই পরিবহন করা হয়।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, হরমুজ প্রণালি যদি সত্যিই বন্ধ হয়ে যায়, তবে জ্বালানি তেলের দাম আরও দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে, যার প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতেও।
(ঢাকাটাইমস/২৩ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন