মির্জাপুরের সেই কলেজছাত্রীর বিনা বেতনে পড়ার ব্যবস্থা

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ জুলাই ২০১৭, ২২:৩৭

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে নিজের বিয়ে ঠেকানো কলেজছাত্রী মীমের বিনা বেতনে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করলেন ইউএনও ইসরাত সাদমীন।

এছাড়া বই কেনার জন্য এক হাজার টাকা ও ইংরেজিসহ কয়েকটি বিষয়ে ফ্রি টিউশনের ব্যবস্থা করেন তিনি। একই সঙ্গে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়ার জন্য মীমের মা লাইজু ইয়াসমিনকে একটি সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মীম ও তার মাকে ডেকে এনে নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন তাদের হাতে সেলাই মেশিন ও নগদ টাকা বুঝিয়ে দেন। এছাড়া উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে মীমের মাকে একটি স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা কার্ড দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমিন জানিয়েছেন।

এ সময় মীমের মামা বেল্লাল হোসেন, মহেড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলেপ হোসেন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

মীম মির্জাপুর কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের মানবিক বিভাগরে ছাত্রী। বাড়ি উপজেলার মহেড়া ইউনিয়নের দেওভোগ গ্রামে। পিতৃহীন মিম দেওভোগ গ্রামে নানা বাড়ি থেকে লেখাপড়া করে। পর পর দুই কন্যা সন্তান প্রসব করায় মীমের বাবা দুই কন্যা সন্তানসহ তার মাকে পরিত্যগ করে অন্যত্র বিয়ে করেন।

উল্লেখ্য, সোমবার মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে নিজের বিয়ে বন্ধ করতে মেসেজ পাঠায় কলেজছাত্রী মীম। তাতে সে লেখে- ম্যাম আমাকে বাচাঁন, আমি লেখাপড়া করতে চাই, কিন্ত ওরা আমাকে জোর করে বিয়ে দেবে। ওই দিন বিকেলে ছাত্রীটি ইউএনওকে ফোন করে বলে, মঙ্গলবার দুপুরের আগে না আসলে তার বিয়ে হয়ে যাবে। দয়া করে দুপুরের আগে এসে বিয়ে হাত থেকে রক্ষা করুন। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে গেলে বাড়ির লোকজন টেরপেয়ে মীমের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয় এবং তাকে অন্য বাড়িতে আটকে রাখে। ছাত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি ও দুর্ঘটনা মাড়িয়ে ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। এ সময় ছাত্রীর মা ব্র্যাকের প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তার আর্থিক দৈন্যের কথা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তোলে ধরেন। ইউএনও ইসরাত সাদমীন মেয়ের লেখপড়া চালিয়ে নিতে সব ধরনের সহযোগির আশ্বাস দিলে তারা বিয়ে বন্ধ করে দেন।

বৃহস্পতিবার সহযোগিতা পেয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় কলেজ ছাত্রী মীম বলেন, ইউএনও স্যার যেহেতু পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন আর আমার লেখাপড়া বন্ধ হবে না। লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে মায়ের মুখে হাসি ফোটানো আমার জীবনের লক্ষ বলে জানান মীম।

মীমের মা লাইজু ইয়াসমিন বলেন, মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে শত কষ্টেও বেঁচে রয়েছি। কিন্ত আর্থিক দৈন্যতার কারণে মেয়ের আনিচ্ছা সত্ত্বেও বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যেহেতু ই্উএনও স্যার পাশে দাঁড়িয়েছেন এখন আর ভয় করি না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন ঢাকাটাইমসকে বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিনা বেতনে মীমের পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মীমের মাকে একটি সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে। এছাড়া বই কেনার জন্য নগদ এক হাজার টাকা, ইংরেজিসহ কয়েকটি বিষয়ে ফ্রি টিউশনির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে মীমের মাকে একটি স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা কার্ড দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমিন জানিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

অর্থ উদ্ধারে পুলিশের সহায়তা চেয়ে পাননি, পরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গার্মেন্টস কর্মী

ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির নতুন কমিটির শপথ

সিলেটে ২ কোটি টাকার ১৪ ট্রাক ভারতীয় চিনি জব্দ

মির্জাপুরে ব্যারিস্টার সীমান্ত চেয়ারম্যান, বাকি দুই পদে জিতলেন যারা

চোরাই পথে লক্ষ্মীপুরে ঢুকছে ভারতের নিম্নমানের চিনি

বোয়ালমারীতে টানা চতুর্থবার উপজেলা চেয়ারম্যান হলেন মুশা মিয়া

লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি

ভালুকা উপজেলায় চেয়ারম্যান রফিক, বাকি দুই পদে বিজয়ী যারা

শরীয়তপুরে প্রাক্তন স্বামীর ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অন্তঃসত্ত্বা নারী

দিনাজপুরের তিন উপজেলায় হাফিজুর, মিল্টন ও ফাহিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :