৩২ হাজার টাকায় নিলাম হওয়া স্কুল পুনঃনিলাম হলো আড়াই লাখে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ৩২ হাজার টাকায় নিলাম হওয়া একটি প্রাইমারি স্কুলের ভবন পুনরায় নিলামে বিক্রি হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকায়। এছাড়া আরও ২টি ভবন পূর্বের নিলামকৃত দরের চেয়ে ৬/৭ গুণ বেশি টাকায় নিলাম হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রকাশ্যে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলাম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া খাতুন।
এর আগে চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮টি পুরাতন ভবন নামমাত্র দরে নিলাম দেয় উপজেলা শিক্ষা কমিটি। নিলামে অনিয়ম হয়েছে মর্মে ঢাকা টাইমসসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। তখন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস.এম. শান্তুনু চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসক। ৪ মাস পর তদন্ত কমিটির সুপারিশে তিনটি স্কুল ভবন পুনরায় নিলাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
পুনরায় নিলাম হওয়া ওই তিনটি ভবনের মধ্যে রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি অংশ এক লাখ ৩৬ হাজার টাকায় পুনরায় নিলাম হয়। যা পূর্বে নিলাম হয়েছিল ২৮ হাজার ৫০০ টাকায়।
নয়াদিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনরায় নিলাম হয়েছে ২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকায়। যা ৩২ হাজার টাকায় পূর্বে নিলাম দেওয়া হয়েছিল।
নুরপুর ক্যাপ্টেন মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পূর্বের নিলাম মূল্য ছিল ১৩ হাজার টাকা। পুনরায় নিলাম হয়েছে এ লাখ ৭ হাজার টাকা।
নিলাম ডাকে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, নিলাম কমিটি পূর্বে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নামমাত্র মূল্যে নিলাম দিয়েছিল। যা পুনরায় নিলামে প্রমাণ মিলেছে বাকি ৫টি ভবনও পুনরায় নিলাম দেওয়া হলে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হতো।
অভিযোগ রয়েছে, একটি সিন্ডিকেট নিলাম কমিটিকে ম্যানেজ করে কম দামে ভবনগুলো নিলামে কিনে নিয়েছিল। এতে বিপুল পরিমাণ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার। যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
জানা যায়, গত ১ ফেব্রুয়ারি আখাউড়ায় ৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন স্কুল ভবন এক লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকায় নিলামে বিক্রি করে সরকারি নিলাম কমিটি। এসব স্কুলের মধ্যে রয়েছে রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াদিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছয়গড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুরপুর ক্যাপ্টেন মাহবুব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাঙ্গাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আনোয়ারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাটামাথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সর্বনিম্ন ৯ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩৩ হাজার টাকার মধ্যে এসব ভবন বিক্রি করা হয়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রশাসনের।
নিলাম অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ ইলিয়াস উদ্দিন, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফুর রহমান।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিলাম ডাক কমিটির সভাপতি রাবেয়া আক্তার বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশে ৩টি ভবন পুনরায় নিলাম দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫টি ভবনের বিষয়ে তদন্ত কমিটির কোনো আপত্তি না থাকায় সেগুলো পুনরায় নিলাম দেওয়া হবে না। তবে পূর্বে কম মূল্যে কেন নিলাম দেওয়া হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছু বলেননি।
(ঢাকাটাইমস/০৬জুন/প্রতিনিধি/পিএস)