প্রায় প্রস্তুত উঁচু দেয়ালবেষ্টিত আসামের ডিটেনশন ক্যাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:৩২

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশজোড়া বিক্ষোভ, হিংসার জেরে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, কোনো ডিটেনশন ক্যাম্পই নেই দেশে! অথচ আসামের গোয়ালপাড়ায় দেশের বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যেখানে রাখা হবে অন্তত ৩ হাজার মানুষকে, যারা নতুন আইন মোতাবেক আর ভারতের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারবেন না।

আসাম সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশের বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্পটি পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে মার্চেই।

ক্যাম্পটি বানানো হচ্ছে গুয়াহাটি থেকে ১২৯ কিলোমিটার দূরে গোয়ালপাড়ার মাতিয়ায়। ২৫ বিঘা জমির উপর। ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে। গোটা ক্যাম্প ঘিরে তোলা হচ্ছে ২০ থেকে ২২ ফুট উঁচু দেওয়াল। এটি যেন একটি জেলখানা!

নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সাইট সুপারভাইজার মুকেশ বসুমাতারি বলেন, ‘এ মাসের মধ্যেই আমাদের কাজ শেষ করার কথা ছিল। তেমনই বলা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষায় কাজ বন্ধ থাকায় দেরি হয়ে গেল। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য কাঁচামাল সময়মত পৌঁছবে কি না, সেটা নিয়েই এখন আমি বেশি চিন্তিত।’

মুকেশের বাড়ি অসমের কার্বি আংলং জেলায়। সেখান থেকেই মাতিয়ায় এসে গোটা প্রকল্পের নির্মাণ-কাজের দেখভাল করছেন তিনি। মুকেশ জানান, ডিটেনশন ক্যাম্পে মোট ১৫টি বাড়ি বানানো হবে। প্রত্যেকটিই চার তলার। প্রত্যেকটি বাড়িতে থাকবেন ২০০ জন মানুষ। ক্যাম্পে থাকবে স্টাফ কোয়ার্টার, হাসপাতাল, স্কুল, অফিস কমপ্লেক্স, রান্নাঘর, খাওয়ার ঘর ও নানা অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি হল। ক্যাম্পে আলাদা জায়গায় বানানো হচ্ছে টয়লেট কমপ্লেক্স।

আসামের বিভিন্ন জয়াগায় এমন আরও ১০টি ডিটেনশন ক্যাম্প গড়ে তোলা হবে বলে রাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে। এ বছরই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি অনুযায়ী অসমের ১৯ লক্ষ মানুষ তাদের নাগরিকত্ব খুইয়েছেন। যা অসমের মোট জনসংখ্যার ৬ শতাংশ। তাদের রাখা হবে এই সব ডিটেনশন ক্যাম্পে।

২০০৯ থেকে ২০১৫ এর মধ্যে অসমে মোট ৬টি ডিটেনশন ক্যাম্প বানানো হয়েছিল। গোয়ালপাড়া, কোকড়াঝাড়, যোরহাট, ডিব্রুগড়, তেজপুর ও শিলচরে। নাগরিকত্বের প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি যেসব ভোটার, তাদের ঠাঁই হয়েছে ওই ডিটেনশন ক্যাম্পগুলিতে। তাদর নাম- ‘ডি-ভোটার’।

কিন্তু সেখানে থাকা যে কতটা দুর্বিষহ, সেই কাহিনী শুনিয়েছেন মহম্মদ সানাউল্লা। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরির পর অবসর নেওয়া সানাউল্লা নাগরিকত্ব খুইয়েছেন গত মে মাসে। সানাউল্লার কথায়, ‘ক্যাম্পগুলির একেকটা ঘরে ৪০/৪৫ জন করে রাখা হয়। রাতে মেঝেতে শুতে হয়, জায়গার অভাবে। বাথরুমও খুব নোংরা। যে খাবারদাবার পরিবেশন করা হয়, তা মুখে তোলার মতো নয়।’

ঢাকা টাইমস/৩০ডিসেম্বর/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :