২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা: কামাল পাঠিয়েছিলেন অনেককে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২০, ১৭:১৫| আপডেট : ০১ জুন ২০২০, ১৮:২৫
অ- অ+

লিবিয়ার নিজদা শহরে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি হত্যার ঘটনায় মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা কামাল উদ্দিন ওরফে হাজী কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৮ মে ওই নৃশংস হত্যাকান্ডে নিহত অনেকে কামালের মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়েছিল। দীর্ঘ একযুগ ধরে এই মানবপাচারকারী বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করে ইউরোপে লোক পাঠাতো।

সোমবার তাকে গ্রেপ্তারের পর মিডিয়ার সামনে আনে র‍্যাব। পরে বিস্তারিত গণমাধ্যমে জানায় এলিট ফোর্সটি।

র‍্যাব জানায়, বিদেশ পাঠানোর পথে চক্রটি পদে পদে লোকদের জিম্মি করত। সেই সঙ্গে নির্যাতন চালিয়ে পরিবারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো। ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে তাদের অনেকেই এই কামালের মাধ্যমে লিবিয়ায় পাড়ি দিয়েছিল। এমন তথ্য প্রমাণ তারা পেয়েছে।

ইউরােপে উন্নত জীবনের প্রলােভনে অসহায় বাংলাদেশিদের অবৈধভাবে নৌ-পথ, দুর্গম মরুপথ দিয়ে পাচার করা হতো। অবৈধ অভিবাসীদের দুর্বলতার সুযােগ নিয়ে তাদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় এবং শারীরিক নির্যাতন করত চক্রটি।

গ্রেপ্তার কামাল কুখ্যাত দালাল চক্রের অন্যতম মূলহােতা দাবি করেছে র‍্যাব। বাহিনীটি বলছে, সে একযুগে ধরে অবৈধভাবে লিবিয়াতে প্রায় চারশ বাংলাদেশিকে পাঠিয়েছে। লিবিয়া ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে পাঠানো হতো।

টাইলস কাজে প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়া পাঠাত:

মানবপাচারকারী কামাল একজন টাইলস্ কন্ট্রাক্টর। এই কারণে অনেক টাইলস শ্রমিকের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। এই সুযােগ কাজে লাগিয়ে তিনি শ্রমিকদের লিবিয়া যেতে প্রলোভন দেখাতো। বিশেষ করে- দেশে যারা দৈনিক ৫০০-৮০০ টাকা যারা আয় করে তারা লিবিয়াতে গেলে ৫০০০-৬০০০ টাকা আয় করতে পারবে। তার আশ্বাসে অনেকে সেখানে যেতে রাজি হতো। কামাল প্রথমে তাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিত, আর লিবিয়া পৌঁছে বাকি ৪ লাখ টাকা দিতে কাজ করে দিতে বলত। এই ফাঁদে পা দিয়ে যারা সেখানে যেত তারপর চলত নির্মম নির্যাতন। সেই সঙ্গে পাচারকারী দলের সদস্যরা জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় এবং শারীরিক নির্যাতন করত।

নির্যাতনের ভিডিও দেখি টাকা আদায়:

ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে তাদেরকে নির্যাতন করা হত। সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠাতো। এছাড়া মােবাইলে পরিবারগুলোর সঙ্গে যােগাযােগ করে টাকা আদায় করত। টাকা দিতে না পারলে পাচারকারীরা হত্যা করে মরদেহ সাগরে ফেলে দিত।

লিবিয়ায় হত্যাকান্ডের পর নিহত ও আহতদের পরিবারের সবাই হাজী কামালকে মুক্তিপণের টাকা দিয়েছে বলে দাবি র‍্যাবের। তারা বলছে, মুক্তিপণের টাকা কামালকে দিয়েও কেউ সন্তানদের ফেরত পাননি। এছাড়া তাকে গ্রেপ্তারের সময় পাওয়া ডায়রীতেও টাকা নেওয়ার তথ্য মিলেছে। তাছাড়া নিজেও স্বীকার করেছে।

(ঢাকাটাইমস/০১জুন/এসএস/এইচএফ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
"হাতে হারিকেন ধরিয়ে জাহান্নামে পাঠানো হবে!" — চাঁদাবাজি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার হুঁশিয়ারি
মিডফোর্ডের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বিএনপিকে দায় চাপানো অপরাজনীতি: সালাহউদ্দিন
মিডফোর্টে পাথর মেরে হত্যা আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে: জামায়াত
মিটফোর্ড হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি বিএনপি মহাসচিবের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা