অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ

কুড়িগ্রামে ধরলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় হুমকিতে পড়েছে জেলার একমাত্র শহর রক্ষা বাঁধ, ঘর-বাড়িসহ নানা স্থাপনা। অভিযোগ আছে, দীর্ঘদিন ধরে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। এতে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। দ্রুত অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিদিন দুই শতাধিক ট্রাক্টরের প্রতিটি থেকে দুইশ টাকা করে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা অবৈধভাবে আয় করছেন এই সিন্ডিকেট।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধরলা নদীর পশ্চিম তীর রক্ষা বাঁধের পুরাতন সিএন্ডবি ঘাট, আটা খাওয়ার চর এবং এক ও দুই নং টি বাঁধের কাছ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে স্থানীয় সিন্ডিকেট।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার চিহ্নিত বালু খেকো গোলজারের নেতৃত্বে আজগর, কহিনুর, রাজু, কালাম, আশরাফুল, ফরহাদ, মনছের আলী ও জাভেদের নেতৃত্বে ১২/১৫ জন বালু উত্তোলনের মহা উৎসবে মেতে উঠেছে।

বাঁধের নিচে বসবাসকারী রহিমা, সালেকা, নুরে আলম ও সাইফুল জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর থেকেই বালু তোলা হচ্ছে। এতে তাদের ঘর-বাড়ি যেমন ভাঙনের মুখে পড়ছে, তেমনি ভাঙনের মুখে পড়বে শহর রক্ষা বাঁধ।

অন্যদিকে ট্রাক্টর চালক সহিদুল, সুমন মিয়া ও শফিকুল জানান, ট্রাক্টর প্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে দিয়ে তারা বালু কিনে নিয়ে যান।

টাকা আদায়কারী আব্দুর রব বলেন, ‘আমি ৩০০ টাকার দিন মজুর। এক নং টি বাঁধ এলাকায় ট্রাক্টর প্রতি ২০০ টাকা করে আদায় করে গোলজারের নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের কাছে জমা দেই। দিনে গড়ে ৪০/৪৫ হাজার টাকা আদায় হয়। এ হিসাবে মাসে আয় দাঁড়ায় ১২/১৪ লাখ টাকা। এ টাকার হিস্যা অনেককে দিতে হয়।’

তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গোলজারের ফোন নম্বরে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সিন্ডিকেটের অপর সদস্য জাভেদ জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে বালু তোলার সঙ্গে জড়িত নন। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

তবে এ ফোনালাপের পর তিনি তার একাধিক প্রতিনিধির মাধ্যমে এ প্রতিবেদকের কাছে নিউজ না করার তদবীর জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৩নভেম্বর/পিএল)